ইতালিতে প্রথম স্বেচ্ছামৃত্যু
প্রকাশিত: ১৭:৩০ ১৯ জুন ২০২২ আপডেট: ১৭:৩৩ ১৯ জুন ২০২২

ছবি: ফ্রেডরিকো কার্বনি
দীর্ঘ এক যুগ ধরে এক অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছিলেন ৪৪ বছর বয়সী প্রাক্তন ট্রাক চালক ফ্রেডরিকো কার্বনি। গলা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পক্ষাঘাতে অসাড় হয়ে গিয়েছিল। অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি খুঁজছিলেন তিনি। অবশেষে বৃহস্পতিবার মিলল সেই কাঙ্খিত মুক্তি। চিকিৎসকের সাহায্য শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছামৃত্যুকেই বরণ করে নিলেন কার্বনি। ইতালির ইতিহাসে এই প্রথম স্বেচ্ছামৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
এমনিতে ইতালির আইন অনুযায়ী, কারও মৃত্যুতে সাহায্য করা অপরাধ। কিন্তু ২০১৯ সালে সাংবিধানিক আদালত জানিয়েছিল, সামান্য কিছু ব্যতিক্রম হতে পারে। তবে তার জন্য কঠিন শর্তপালন করা দরকার।
বিচারপতিরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, যে সমস্ত অসুস্থ মানুষ আর কখনই সুস্থ হয়ে উঠবেন না এবং বেঁচে থাকার জন্য অন্যের উপরে নির্ভরশীল হয়ে থাকবেন, তারাই স্বেচ্ছামৃত্যু বা ইউথেনশিয়ার অধিকার পাবেন। তবে অসুস্থ রোগীকে নিজেই নিজের মৃত্যুবরণের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও স্বেচ্ছামৃত্যুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল দেশটির ক্যাথলিক গির্জার পাদ্রিরা এবং রক্ষণশীল দলের নেতারা।
ইতালিতে স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসা লুকা কসিওনি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১২ বছর আগে এক দুর্ঘটনার পরেই সম্পূর্ণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন ফ্রেডরিকো কার্বনি। ৪৪ বছর বয়সী অবিবাহিত কার্বনি এক যুগ শয্যাশায়ী ছিলেন। ২৪ ঘন্টার এক সাহায্যকারীর দাক্ষিণ্যেই বেঁচে ছিলেন। অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
আরো পড়ুন>> অস্ত্রোপচারে যুবকের পেটে মিলল আড়াইশ পেরেক, ৩৫ মুদ্রা
বৃহস্পতিবার চিকিৎসকের সহায়তায় মুক্তি পেয়েছেন তিনি। বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে তার সারা শরীরে বিষ ছড়িয়ে দেওয়া হয়। খানিক বাদেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুর আগে কার্বনি বলেছেন, ‘জীবনকে এভাবে শেষ করে দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কী করব? বাঁচার জন্য সবরকম চেষ্টা করেছি। আর সম্ভব নয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে জীবনের শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছি। এখন আমি যেখানে খুশি উড়ে যেতে পারব।’
সূত্র: ডয়চে ভেলে
ডেইলি বাংলাদেশ/মাহাদী