কালীগঞ্জে ১৯৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ, বাম্পার ফলন
প্রকাশিত: ১৯:৫৪ ১৬ মার্চ ২০২২

কালীগঞ্জে এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ
গাজীপুরের কালীগঞ্জে এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনের সঙ্গে বাজারদরও ভালো। তাই স্থানীয় পেঁয়াজ চাষিরা ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন। এতে আগামীতে পেঁয়াজ চাষে আরো বেশি আগ্রহী হবে কৃষক, বাড়বে নতুন নতুন পেঁয়াজ চাষি।
স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির ও সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে পেঁয়াজ চাষিদের সহযোগীতা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জে এ বছর ১৯৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে ৯ থেকে ১০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ। তবে কৃষি অফিস বলছে চাষ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। গত বছর ১৯০ হেক্টর জমিতে সাড়ে ৮ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। গাজীপুর জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের চাষ ও উৎপাদন হয়।
সূত্র আরো জানায়, কালীগঞ্জ পৌরসভাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নেই কম বেশি পেঁয়াজের চাষ হয়। তবে উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নে পেঁয়াজের চাষ একটু বেশি হয়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজের জাতগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি পেঁয়াজ-১, তাহেরপুরি ও ফরিদপুরি উল্লেখ্যযোগ্য। এছাড়াও কিছু স্থানীয় জাতের পেঁয়াজ রয়েছে।
বক্তারপুর ইউপির খৈকড়া এলাকার পেঁয়াজ চাষি মোক্তার হোসেন জানান, গত বছর ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। কিন্তু অসময়ে বৃষ্টির কারণে ফলন খুব খারাপ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে দেওয়া বীজ ও সারে এবার তিনি একই পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন। পাশাপাশি কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নানা পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছেন। ফলন ও দাম দুটোই ভালো পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন এই পেঁয়াজ চাষি।
একই ইউপির উত্তর খৈকড়া এলাকার আরেক পেঁয়াজ চাষি আওলাদ হোসেন জানান, গত বছর তিনি মাত্র আধা বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করে ছিলেন। কিন্তু আশানুরুপ ফলন পাননি। এ বছর আরো আধা বিঘা জমি বৃদ্ধি করে ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন। এ বছর ফলন হয়েছে ভালো। তাছাড়া বাজারে পেঁয়াজের দামও ভালো হওয়ায় তিনি আশা করছেন ভালো দাম পাবেন। কৃষি অফিস থেকে সার ও বীজ পাওয়া উৎপাদিত পেঁয়াজ ২-৩ সপ্তাহ পরেই উঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
কথা হয় একই এলাকার পেঁয়াজ চাষি ইমাম উদ্দিন খন্দকারের সঙ্গে। তিনিও এবার পেঁয়াজ চাষ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার বক্তারপুর ইউপির খৈকড়া ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহিন মিয়া বলেন, উপজেলার মধ্যে বক্তারপুর ইউপির খৈকড়ার এক মাঠেই প্রায় ২০০ একর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরে ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতিনিয়িত স্থানীয় পেঁয়াজ চাষিদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, গত বছর পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের বীজের অনেক দাম ছিল। ১ কেজি পেঁয়াজ বীজের দাম প্রায় ৬ হাজার ছিল। এছাড়াও দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর নতুন নতুন কৃষক পেঁয়াজ চাষে উদ্ধুদ্ধ হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এ বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রণোদনার আওতায় স্থানীয় ৫০ জন কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার এবং রাজস্ব ফলোআপ কর্মসূচির আওতায় আরো ৬৮ জন চাষিকে ১ কেজি করে পেঁয়াজের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে ৫টি ও এনএটিপি-২ প্রকল্পের আওতায় ৬টি প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকরা বিনামূল্যে ডিএপি, এমওপি, টিএসটি, ইউরিয়া, জিং সার, বোরন ও কেওয়া দেওয়া হয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এমকে