জেলখানা-হাসপাতালে বিক্রি হতো মরা ছাগলের মাংস!
প্রকাশিত: ১৮:২৬ ১৯ ডিসেম্বর ২০২১

জব্দকৃত মরা ছাগলের মাংসসহ আটককৃতরা (ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ)
দীর্ঘদিন ধরেই রাজশাহীর জেলখানায় যাচ্ছে মরা ছাগলের মাংস। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নগরীর বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ, এমনকি খোলা বাজারেও সরবরাহ করা হচ্ছিল এ মাংস।
শনিবার বিকেলে বালিয়া এলাকায় রা ছাগলের মাংসের চালান আটকে দেয় নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। সেখান থেকেই বেরিয়ে পড়ে থলের বিড়াল।
আটকরা হলেন- রাজশাহী নগরীর দরগাপাড়ার এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান আপেল, ফাইসাল, তাদের সহযোগী কায়েস ও ফয়সাল হোসেন। তাদের কাছে মৃত ছাগলের ১৫০ কেজি মাংস, চারটি মৃত জবাই করা ছাগল ও ২৭টি রুগণ ছাগল উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, অল্প মূল্যে মরা ছাগলের মাংস, মরা জবাই করা ছাগল এবং অসুস্থ ছাগল কিনে নগরীতে আনছিলেন তারা। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এ কাণ্ডে যুক্ত। তারা এ মাংস সরবরাহ করে আসছিলেন নগরীর বিভিন্ন খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁ, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও বিরিয়ানি হাউজে। বিক্রি হচ্ছিল খোলা বাজারেও। জেলখানা, এমনকি বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও যাচ্ছিল এ মাংস।
পরে জাতীয় ভোক্তা অধিদফতর এ কাণ্ডের হোতা মশিউর রহমান আপেল ও মো. ফাইসালকে ৮০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে জবাই করা মৃত ছাগল এবং মৃত ছাগলের মাংস মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল।
তিনি জানান, নগরীর খাবার হোটেলে সরবরাহের উদ্দেশ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে মৃত ছাগলের মাংস, মৃত জবাই করা ছাগল ও অসুস্থ ছাগল আসছিল। গোপন সংবাদ পেয়ে উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে নগরীর বালিয়া মোড় এলাকায় রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ।এ সময় ছাগলবাহী পিকআপ ভ্যান আটক করে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে ওই পিকআপ ভ্যান থেকে বস্তাভর্তি ১৫০ কেজি মরা ছাগলের মাংস, ৪টি জবাই করা মরা ছাগল ও ২৭টি অসুস্থ ছাগল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটক করা হয় ওই চারজনকে।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, বস্তাভর্তি মাংস ও জবাইকৃত ছাগলগুলো পরীক্ষার জন্য রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নেয় পুলিশ। সেখানে জেলা সেনেটারি ইন্সপেক্টর পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানান, মাংসগুলো মরা ছাগলের।
এদিকে জেলখানায় মৃত ছাগলের মাংস সরবরাহের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক সুব্রত কুমার বালা। তিনি বলেন, মাসে তারা একবার ছাগির মাংস নেন। সেই ছাগল জবাই হয় জেলগেটেই। এরপর দেখে শুনে তারা মাংস নেন। তাছাড়া এই কাণ্ডে যারা আটক হয়েছেন, ওই নামে তাদের কোনো সরবরাহকারীও নেই।
ডেইলি বাংলাদেশ/আরএডি