কিশোরগঞ্জে একই পরিবারের তিনজন হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলো খুনি ছোট ভাই
প্রকাশিত: ১৫:৩৫ ৩০ অক্টোবর ২০২০ আপডেট: ১৫:৩৬ ৩০ অক্টোবর ২০২০

নিহত আসাদ মিয়া, তার স্ত্রী পারভিন আক্তার ও ছেলে লিয়ন
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে খুনি দীন ইসলাম। জমি ও পারিবারিক বিরোধের জেরেই বড় ভাই আসাদ মিয়া, ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যা করে গর্তে পুঁতে রাখে সে।
কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউপির জামসাইট গ্রামের চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে এখনো মামলা হয়নি। তবে আটক অপর দুই বোন ও ভগ্নিপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে দীন ইসলাম। সে জানায়, বড় ভাই আসাদ মিয়ার সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো তার। বসতবাড়ির এক চিলতে জমি আত্মসাৎ করতেই মুদি ব্যবসায়ী আসাদ, তার স্ত্রী পারভিন আক্তার ও তাদের ১২ বছর বয়সী ছেলে লিয়নকে হত্যা করে সে।
বুধবার রাতে স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন আসাদ। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের দুই ছেলে মোফাজ্জল ও তোফাজ্জল ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে বাবা-মা ও ছোট ভাইকে খুঁজে না পেয়ে প্রতিবেশীদের জানান। পরে রক্তের দাগের সূত্র ধরে বাড়ির আঙিনায় মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর পরই আটক করা হয় নিহত আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলাম, বোন নাজমা, তাসলিমা ও এক বোনের জামাই ফজলুর রহমানকে। তবে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে দীন ইসলাম। হত্যায় তার দুই বোনসহ এক বোনের স্বামীও অংশ নেয় বলে জানিয়েছে সে।
কটিয়াদীর বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিলন বলেন, শুধু দীন ইসলাম, তার মা ও বোনের দ্বারা তিনজনকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া খুনি থাকতে পারে।
ওই ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মো. জাহাঙ্গীর জানান, কিছুদিন আগে আসাদের মা জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসার জন্য দরখাস্ত দিয়েছিলেন। শনিবার আসাদের বাড়িতে সালিস হওয়ার কথা ছিলো। তার আগেই নির্মম এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
নিহত আসাদের ছেলে জানান, আমার বাবা, মা ও ভাইকে যারা খুন করেছে; তাদের অনেকেই বাইরে ঘুরছে। তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
কিশোরগঞ্জের এসপি মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, নিহত আসাদ মিয়ার ছোট ভাই দীন ইসলামসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার পর আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দীন ইসলামসহ অন্যদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে। হত্যাকাণ্ডে আরো কেউ জড়িত থাকলে খুঁজে বের করা হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এআর