‘অহন মরলে কবরের জায়গা অইব না’
প্রকাশিত: ১৮:০২ ২৩ জুন ২০২২

ইনসেটে ৮০ বছর বয়সী কাচুমা
‘আমার বয়স হইছে। কোন সময় জানি মরণ অয়। অহন মরলে মাটি দেওয়ার জায়গা অইব না। আটদিন অয় বানের হানি (পানি) আইছে, খাইয়া না খাইয়া হানির মধ্যে আটকে আছি। কেউ আইয়া ছুহি দিয়া দেখল না। আমার ছেরা (ছেলে) একটা। ছেরাডা কাম করলে খাই। বন্যায় কামও করতো হারে না। সরকার থাইককে (থেকে) যা আইয়ে সব আত্মীয় ও ধনী মাইনষেরে দেয় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা।’
এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ৮০ বছর বয়সী কাচুমা। তিনি নেত্রকোনার মদন উপজেলা গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের শান্তিপাড়া গ্রামের নিন্দর আলীর স্ত্রী।
শুধু কাচুমাই নয়, শান্তিপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবারের লোকজন পানিবন্দি রয়েছেন। তারা এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণসামগ্রী পাননি। এছাড়া গোবিন্দশ্রী বাড্ডায় থাকা আশ্রয়কেন্দ্রটিও একাই দখল করেছেন স্থানীয় মোহাম্মাদ আলী।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শুক্রবার বিকেল থেকে উপজেলার ৭০-৮০ ভাগ স্থানে বন্যার পানি ঢোকে। পর্যায়ক্রমে ৯০ ভাগই পানিতে তলিয়ে যায়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েন লক্ষাধিক মানুষ। পরে বন্যার্তদের জন্য ৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। এরপর অনেকেরই ঠাঁই হয় আশ্রয়কেন্দ্রে। এছাড়া পানিবন্দিদের জন্য শুকনো খাবারসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে উপজেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে ৯টি কন্ট্রোলরুসহ ৯টি মেডিকেল টিমের সেবা অব্যাহত রয়েছে। তবে মদন উপজেলার বন্যার উন্নতি হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শান্তিপাড়া গ্রামে শতাধিক পরিবার রয়েছে। কয়েকটি পরিবার গোবিন্দশ্রী বাজারের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। কিন্তু বাড্ডা আশ্রয়কেন্দ্রটি মোহাম্মাদ আলী দখল করে রাখায় কেউ আশ্রয় পাননি।
গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান মামুন বলেন, শুক্রবার গোবিন্দশ্রী গ্রামে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, কেউ আশ্রয়কেন্দ্র দখল করে থাকলে উচ্ছেদ করা হবে। কেউ ত্রাণ না পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা করা হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এমআর