আমরা চাই মানুষ হলে গিয়ে ছবিটি দেখুক: নিরব
প্রকাশিত: ১৫:৫৬ ১৬ জুন ২০২২ আপডেট: ১৮:৪২ ১৬ জুন ২০২২

নিরব
ঢাকাই সিনেমার এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ও ব্যস্ত নায়ক নিরব হোসেন। ২০০৯ সালে শাহীন-সুমনের পরিচালনায় ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ ছবিটির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন নিরব। শুক্রবার (১৭ জুন) প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে এই নায়কের নতুন ছবি ‘অমানুষ’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অনন্য মামুন। নতুন এই ছবি ও অন্যান্য বিষয়ে নিয়ে কথা হয় ডেইলি বাংলাদেশ-এর সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুম্মান রয়।
‘অমানুষ’ কেমন প্রচারণা চলছে?
নিরব: ছবির প্রচারণা নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় কাটছে। একটা ছবি যখন মুক্তি পায়, দর্শকদের কাছে ছবিটি পৌঁছে দিতে এর প্রমোশনাল যে কাজগুলো থাকে, সেগুলো নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। ঢাকার মধ্যে বেশির ভাগ বড় হলগুলোতে আমাদের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। শুরু থেকেই সিনেমাটির প্রচারণা নিয়ে কিছুটা ভিন্ন পরিকল্পনা ছিল। আমরা প্রথমেই চিন্তা করেছি, দেশের কয়েকটি ইউনিভার্সিটিতে সিনেমাটির প্রচারণার অংশ হিসেবে ক্যাম্পেইন করব। এ কারণে আমরা ঢাকার এবং স্টুডেন্ট কমিউনিটিতে গিয়েছি। শিক্ষার্থীরা এখন সিনেমা দেখছে, সর্বোপরি দর্শকেরও প্রত্যাশা বেড়েছে। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে সেসব জায়গায় প্রচারণাও চালিয়েছি। বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনের মতো জনবহুল জায়গাগুলোতেও আমাদের ছবির প্রচারণা চলছে। কারণ, আমরা চাই মানুষ হলে গিয়ে ছবিটি দেখুক। এখন তো দর্শকদের হলে গিয়ে ছবি দেখার অভ্যাস কমে গেছে। অনেক ছবি মুক্তি পায় এক সপ্তাহ চলে, পরে চলে না। এজন্য আমরা চেষ্টা করি দর্শকদের রিচ করাতে। সেই কাজেই ব্যস্ত।
‘অমানুষ’ নিয়ে প্রত্যাশা কেমন?
নিরব: প্রত্যাশা অনেক বেশি। ছবিটির লুক, পোস্টার, ট্রিজার, ট্রেলার দেখে সবাই অনেক প্রশংসা করেছে। আমার কাছে মনে হয় দর্শক যারা হলে আসবেন, তাদের কাছেও অবশ্যই ছবিটি ভালো লাগবে। তারা যে প্রত্যাশা নিয়ে হলে আসবেন, আশা করি সেটা পূরণ হবে। আমরা অভিনেতারা আমাদের প্রতিটি কাজ নিয়েই আশাবাদী। তবে কিছু কিছু ছবি নিয়ে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির তফাৎটা কম বেশি হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ‘অমানুষ’ সিনেমা নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ব্যবধানটা অনেক কম।
এটি একটি তারকাবহুল কাস্টিংয়ের ছবি। ছবিতে আমার নায়িকা রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ছাড়াও মিশা সওদাগর, শহীদুজ্জামান সেলিম, ডন, রাশেদ মামুন অপু, নওশাবা ও আনন্দ খালেদের মতো বড় বড় তারকা আছেন। এটাই মূলত সিনেমাটিকে আলাদা করেছে।
এই সময়ে একসঙ্গে দুই সিনেমা মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?
নিরব: বর্তমানে চলচ্চিত্রে সুদিন ফেরাতে যখন ইন্ডাস্ট্রির মানুষ প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছে, তখন এই রকম কিছু বিষয়ে আমাদের আরো বেশি ভাবার দরকার। সরকারও উদ্যোগী হয়েছে। যেহেতু দর্শক কমে গেছে তাই উৎসবের বাইরে একসঙ্গে দুই ছবির মুক্তি দর্শকদের ভাগ করে দিচ্ছে। ঠিক তেমনি ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছে প্রযোজক। অন্তত লগ্নিকারকদের কথা ভেবে হলেও এটা আমাদের কাম্য নয়।
আপনার চরিত্রটি নিয়ে বলুন...
নিরব: এখানে আমি ডাকাত চরিত্রে অভিনয় করছি। একজন স্মার্ট ডাকাত। চেলেঞ্জিং একটা ক্যারেক্টর ছিল। মামুন ভাইয়ের সহযোগিতায় চরিত্রটির জন্য লুক, গেটআপে পরিবর্তন এনেছি। ডাকাতের চরিত্রের জন্য বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে শুরু করে সবকিছুর মধ্যে যে চেঞ্জিংগুলো আনার দরকার ছিল সেগুলো ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। আমার জায়গা থেকে আমি শতভাগ চেষ্টা করেছি।
মিথিলার সঙ্গে বড়পর্দায় প্রথমবার কাজ করেছেন। তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নিরব: মিথিলার সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকে পরিচয়। আগে কাজও করেছি তার সঙ্গে। তের-চৌদ্দ বছর আগে আমরা একসঙ্গে বিজ্ঞাপন করেছি, ফটোশুট করেছি। দুটি বিজ্ঞাপন করেছি, একটা অমিতাভ ভাইয়ের ও অন্যটি তারেক আনাম খানের। তার সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক। এবার চলচ্চিত্রে কাজ করলাম। আমাদের বোঝাপড়ার জায়গাটা ভালো ছিল। মিথিলা অনেক গুণী একজন অভিনেত্রী। খুবই ন্যাচারাল অভিনয় করে। চরিত্রে নিজেকে সুন্দরভাবে মেলে ধরতে পারে। ‘অমানুষ’ এর নুসরাত চরিত্রটি সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য অন্যান্য শিল্পীদের মতো সেও অনেক পরিশ্রম করেছে। খুবই ভালো লেগেছে তার কাজ আর চেষ্টা।
ছবিটির শুটিং হয়েছে বনে জঙ্গলে। সেখানে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নিরব: ছবিটির গল্পই আউটডোর বেইজ। এর পুরো শুটিংয়ে অমানুষিক কষ্ট করতে হয়েছে। দৈনিক জংগলের মধ্যে শুটিং করতে হয়েছে। সেখানে প্রচুর গরম ছিল। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গভীর জঙ্গলে থাকতে হয়েছে পুরো ইউনিটকে। বলতে গেলে, তিন সপ্তাহের বেশি সময় শহরের কোলাহল দেখিনি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
নিরব: যে কাজগুলো করছি, সেগুলোকে ভালো একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া। এমন জায়গায় নিজেকে নিতে চাই, যেন একটি ছবি থেকে পরেরটি ভালো হয়। সেটা থেকে তারপরেরটা আরো ভালো হয়। ভালো ভালো কাজ করতে চাই। দর্শকদের ঠকাতে চাই না। দর্শকদের ভালো কাজ উপহার দিতে চাই।
হাতে থাকা কাজগুলো কী অবস্থা?
নিরব: সরকারি অনুদানের দুটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সে দুটি হলো ‘ছায়াবৃক্ষ’ ও ‘ফিরে দেখা’। এছাড়া ‘রোদ্র ছায়া’, ‘ক্যাসিনো’, ‘কয়লাস’হ আরো কিছু ছবির কাজ হাতে রয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/টিএএস