কিডনি রোগীরা রোজা রাখতে চাইলে যা করবেন
প্রকাশিত: ১২:১০ ১৭ এপ্রিল ২০২২

ফাইল ছবি
রমজান মাসে সব মুসলিমদের পক্ষে রোজা রাখা সম্ভব হয় না। এর একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে বিশেষ কিছু রোগ। যেমন কিডনি রোগ। অনেক কিডনি রোগীই রোজা রাখতে সক্ষম থাকেন না। আবার কেউ কেউ রোজা রাখতে পারেন।
তাইতো রমজান মাসে বিভিন্ন ধরনের কিডনি রোগীর রোজা রাখা বা না রাখার ব্যাপারে কী পরামর্শ দেওয়া যায়—সেটা নিয়ে স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের সব সময়ই চিন্তা করতে হয়।
এই ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেসিডেন্ট, নেফ্রোলজি বিভাগের ডা. মো. মনিরুল ইসলাম ফাহিম।
তিনি বলেন, গুরুতর অসুস্থ কিডনি রোগী ছাড়া অন্যরা কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চললে নিরাপদেই রমজান মাসে রোজা রাখা সম্ভব। তিনি বিভিন্ন ধরনের কিডনি রোগীর কথা উল্লেখ করেছেন। তবে সব ধরনের কিডনি রোগী রোজা রাখার আগে অবশ্যই নিজের ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেয়ার কথাও জানিয়েছেন।
হঠাৎ কিডনি বিকল রোগী
গবেষণায় দেখা গেছে, পরিপূর্ণ নিয়ম মেনে রমজান মাসে রোজা রাখলে সেটা বরং একিউট কিডনি ইনজুরির ঝুঁকি কমায়, বিশেষ করে যাদের অন্যান্য রোগ—যেমন ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের ক্ষেত্রে রোজা গুরুত্বপূর্ণ হারে ঝুঁকি কমায়। যদিও এ ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি এবং বড় আকারে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
কিডনিতে যাদের পাথর আছে
এটা প্রমাণিত যে কম প্রস্রাব হওয়া এবং ডিহাইড্রেশন কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। যাদের কিডনিতে আগে পাথর হয়েছে অথবা যারা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন—তাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রতি ২৪ ঘণ্টায় তাদের প্রস্রাবের পরিমাণ দুই লিটারের কম না হয়।
দীর্ঘমেয়াদি কিডনি সমস্যা
ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগী—বিশেষ করে যারা স্টেজ-৩ থেকে স্টেজ-৫ সিকেডিতে আক্রান্ত, তাদের রোজা রাখতে নিরুৎসাহ করা হয়।
ডায়ালিসিস রোগীর রোজা
ডায়ালিসিস নিচ্ছেন এ ধরনের কিডনি রোগীদের ওপরে গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, যেসব রোগী ডায়ালিসিস নিয়ে রোজা রাখেননি তাদের তুলনায় ডায়ালিসিস নেয়া সত্ত্বেও যারা রোজা রেখেছেন, তাদের শরীরে ক্রিয়েটিনিন, ফসফেট, ইউরিয়া তিনটিই কমে গিয়েছে।
ঝুঁকি এড়াতে যা করবেন
* মুখমণ্ডল ফুলে যাওয়া
* হাতে-পায়ে পানি চলে আসা
* ক্ষুধামন্দা, বমি ভাব ও বমি হওয়া
* হঠাৎ প্রস্রাব খুব কমে বা বেড়ে যাওয়া
* প্রস্রাব লাল বা ফেনাযুক্ত হওয়া
* ঘুম কমে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া
* নিয়মিত ক্রিয়েটিনিন মাপা
* নিয়মিত ইলেকট্রলাইট মাপা
* ওজন হঠাৎ কমে-বেড়ে যাওয়া
* অতিরিক্ত দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট।
এসব লক্ষণ দেখা দিলে রোজা বন্ধ রেখে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এএ