চায়ের সঙ্গে পেটে যাচ্ছে মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতিকর প্লাস্টিকের কণা
প্রকাশিত: ১৮:২৮ ১৪ মে ২০২২ আপডেট: ১৮:২৯ ১৪ মে ২০২২

ছবি: সংগৃহীত
চিনির পর এবার চায়েও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা। বাংলাদেশের বাজারে বহুল প্রচলিত টি ব্যাগে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।
টি-ব্যাগের চা পানের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ১০.৯ টন প্লাস্টিক কণা রাজধানী ঢাকায় বসবাসরত মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করেছেন গবেষকরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় একটি টি-ব্যাগে ৫০৫টি এবং খালি টি-ব্যাগে ৪৭৭টি প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এসব প্লাস্টিক কণা আকারে প্রায় ৩৩ থেকে দুই হাজার ১৮০ মাইক্রো মিটার। এ ছাড়া গবেষণায় প্রায় নয় ধরনের রঙের প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যার মধ্যে বাদামি, নীল ও লাল রঙের প্রাধান্য বেশি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিবেদন।
গবেষণায় ব্যবহৃত পাঁচটি ব্র্যান্ডের টি ব্যাগে যেসব প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে সেগুলো
মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব গ্রহণের ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিন, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. এহেদুল আকবর ও মো. আবু বক্কর সিদ্দিক এবং ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব গোয়াস-এর গুইলহার্ম মেলাফিয়া।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘সায়েন্স অব দ্য টোটাল ইনভায়রনমেন্ট’-এ গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণা দলের প্রধান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ঢাকার সুপারমার্কেটগুলোতে পাওয়া যায় এমন পাঁচটি ব্র্যান্ডের টি-ব্যাগের ওপর গবেষণা করে ক্ষতিকর প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি পেয়েছি। একটি খালি টি-ব্যাগের তুলনায় চা-পাতা ভর্তি টি-ব্যাগে মাইক্রোপ্লস্টিকের পরিমাণ বেশি। সংখ্যায় তা প্রায় ২২ দশমিক ২ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায়, চা প্রক্রিয়াজাতকরণের সময়েও প্লাস্টিক কণার সংমিশ্রণ হয়ে থাকে।
জনস্বাস্থ্যর ঝুঁকি বিবেচনায় সর্বক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো কিংবা শূণ্যে নামিয়ে আনার পরামর্শ দেন গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তা নাহলে অদূর ভবিষ্যতে প্লাস্টিকের কণার দূষণে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলেও মনে করেন তিনি।
এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচালিত আরেক গবেষণায় চিনিতে ক্ষতিকর মাইক্রো প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেডএম