১৪০ সন্তানের জনক তিনি, প্রশাসক হিসেবেও ছিল খ্যাতি
প্রকাশিত: ১৬:২৬ ৭ মার্চ ২০২১ আপডেট: ১৬:৩৪ ৭ মার্চ ২০২১

ছবি: ১৪০ সন্তানের জনক তিনি, প্রশাসক হিসেবেও ছিল খ্যাতি
খ্রিষ্টপূর্ব ১৬ থেকে ১১ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল মিশরের ‘নতুন সাম্রাজ্য’। এই সাম্রাজ্যের অন্যতম ফারাও প্রথম সেতি। এই সেতি ছিলেন প্রথম রামেসিসের পুত্র। এই রামেসিসের হাত ধরেই কিন্তু মিশরের ১৯তম সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন। মূলত প্রথম সেতি ও তার পৌত্র দ্বিতীয় রামেসিসই মিশরকে শক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যান।
আমাদের আলোচনার কেন্দ্র প্রথম সেতির পুত্র দ্বিতীয় রামেসিস। ধারণা করা হয়, দ্বিতীয় রামেসিস মোট সন্তান ছিল ১৪০ জন! তিনি ছিলেন মিশরের ১৯তম সাম্রাজ্যের তৃতীয় ফারাও। তার জন্ম ১৩০৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের জুলাই অথবা আগস্টে মাসে। মিশরীয় পুরাণে বর্ণিত সূর্যের দেবতা ‘রা’ থেকে রামেসিস। রামেসিস শব্দের অর্থ ‘সূর্যোদয়’। তার শাসন ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১২৭৯ থেকে ১২১৩ পর্যন্ত।
জানা যায়, বাবা সেতি যখন ক্ষমতায়, তখন দ্বিতীয় রামেসিসের বয়স কম। বাবার শাসনামলের প্রথম ১০ বছরের মধ্যেই কিশোর রামেসিস কমপক্ষে ২০ পুত্র এবং কন্যাসন্তানের জনক হয়ে যান। রামেসিসের জীবনকাল অনেক লম্বা। আর নিজের শাসনকালে তার ছয় থেকে আটজন প্রধান স্ত্রী, বহু অপ্রধান স্ত্রী এবং অসংখ্য উপপত্নী ছিল। সব মিলিয়ে ৮০ পুত্র এবং ৬০ কন্যাসন্তান ছিল তার! এদিক থেকে অন্যান্য ফারাওদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
রাজা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হবেন না, তা কী করে হয়! গবেষকেরা মনে করেন, এত সন্তানের জনক হওয়ার পেছনে দ্বিতীয় রামেসিসের একটি সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য ছিল। রামেসিস চেয়েছিলেন, শুদ্ধ রাজকীয় বংশের পুনরুদ্ধার। তিনি তার পুত্রদের প্রশাসনের উচ্চপদে নিয়োজিত করেছিলেন। প্রথম ১২ পুত্রকে শাসক হিসেবে প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন। তবে কপাল খারাপ ছিল রামেসিসের।
কারণ তার জীবদ্দশায়ই ১২ ছেলের মৃত্যু হয়। অবশেষে তার ১৩তম পুত্র মারনেপতাহ ১২১৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে বসেন। তারপরও খুব বেশি লাভ হয়নি, রামেসিসের রাজত্ব ১৫০ বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।শেষ বয়সে রামেসিস দাঁতের রোগে ভুগেছেন। শেষে ৯০ বছর বয়সে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মিসরের ‘ওয়াদি আল মুলুক’ বলে খ্যাত স্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। পরে সেখান থেকে তার মমি নীল নদের পশ্চিম পাড়ের ‘রয়াল কাশ’–এ স্থানান্তর করা হয়। এরপর ১৮৮১ সালে সেখানেই তিনি আবিষ্কৃত হন। দ্বিতীয় রামেসিসের মমিটি এখন কায়রোর জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এসএ