২২ বছরেও আবাসনের সংকট কাটেনি মাভাবিপ্রবির
প্রকাশিত: ১২:৩৯ ১৮ এপ্রিল ২০২২ আপডেট: ১২:৪৮ ১৮ এপ্রিল ২০২২

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রত্যয় একাত্তর’। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ।
১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)। প্রতিষ্ঠার ২২ বছরেও আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি টাঙ্গাইলের এই বিশ্ববিদ্যালয়। এ কারণে স্নাতক প্রথমবর্ষে ভর্তি হওয়ার পরই শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকটে পড়েন।
বর্তমানে প্রায় ৫৫০০ শিক্ষার্থী টাঙ্গাইলের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। যাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের তিনটি ও মেয়েদের দুটি আবাসিক হল থাকলেও শিক্ষার্থীদের আবাসনের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই সন্তোষ, কাগমারি, পালপাড়া, বেবিস্ট্যান্ড, শান্তিকুঞ্জের মোড়ে, টাঙ্গাইল শহরে উচ্চমূল্যের মেস বা বাসা ভাড়া করে থাকেন।
২০২০-২১ সেশনের নবীনবরণে শায়লা খানম নামে এক অভিভাবক বলেন, ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি যতটুকু জানতে পেরেছি এতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমার মেয়েকে বাইরের হোস্টেল বা মেসে রাখতে ভয় হচ্ছে। তারা কি খাবে? কি করবে? তাদের সার্বিক নিরাপত্তা কেমন হবে এটা নিয়ে আমাদের সন্দেহ থেকেই যায়।
বিজ্ঞান বিভাগের নতুন শিক্ষার্থী মামুন খান বলেন, এখানে নতুন পরিবেশ, অপরিচিত লোকদের ভালোভাবে চিনি না। পরিবারের কেউ নেই এখানে। টিউশন বা অন্যকোনো কাজের সুযোগ নেই। কি করবো বুঝতে পারছি না। বাসা থেকে থাকা-খাওয়ার খরচ কিভাবে দিবে এটা ভেবেই লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে পারছি না। দ্রুত হলে একটা সিট পেলে মন দিয়ে লেখাপড়া করতে পারতাম।
চতুর্থবর্ষের প্রান্ত রায় বলেন, এখনো হলে ওঠার সুযোগ-সুবিধা পাইনি। মাসে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ করতে হয় আবাসন ও খাওয়ার জন্য। যেখানে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের খরচ ১৫০০ টাকা। দ্বিতীয়ত হলে ৫০ টাকা প্রতিদিনের খাবার খরচ। যদি হলে সিট পাই তবে মাসে ৫০০০ টাকা বেঁচে যাবে। এই বয়সে পরিবারের হাল না ধরে বরং পরিবার থেকেই টাকা চাইতে হয়। যা প্রতিটি সন্তানের জন্য কষ্টের।
এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট নাজমুল ইসলাম (হিসাববিজ্ঞান বিভাগ) বলেন, পর্যাপ্ত সিট না থাকায় শিক্ষার্থীরা আবাসন সুযোগ পাচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ইনশাআল্লাহ ৫-৭ বছরের মধ্যে সব শিক্ষার্থী হল পাবেন।
নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট মো. ইসতিয়াক আহমেদ তালুকদার (সিপিএস বিভাগ) বলেন, দ্রুত সময়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। এতে আবাসন সমস্যা সমাধান হবে। এছাড়া প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী তাদের আবাসন সুবিধা পারেন।
এছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সরজমিনে পরিদর্শন করে জানা যায় যে, নির্মাণাধীন এই ভবনটিই হবে ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় আবাসিক ভবন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ হলের কাজ এ বছরের মাঝামাঝি শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। এতে করে প্রায় ১০০০ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধার আওতায় আসবে। যা আবাসন সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তারা আশাবাদী দ্রুত আবাসন সংকট মোকাবিলা করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে মাভাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা শিগগিরই দুটি হলের নির্মাণ কাজ জুনের মধ্যে শেষ করতে চেষ্টা করছি। হল দুইটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে আবাসন সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে। আমাদের জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। আমি আরো দুটো হল নির্মাণ করার চেষ্টা করবো।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেডএম