বশেমুরবিপ্রবির সেই শিক্ষকের অব্যাহতি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আবেদন
প্রকাশিত: ১৩:৫৬ ২৩ জানুয়ারি ২০২২ আপডেট: ১৪:০০ ২৩ জানুয়ারি ২০২২

রোববার বিভাগের শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বরাবর এই আবেদন পত্র জমা দেয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কৃষি বিভাগের এক শিক্ষকের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছে ঐ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচএম আনিসুজ্জামান। বর্তমানে তিনি কৃষি বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রোববার বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বরাবর এই আবেদন পত্র জমা দেওয়া হয়।
এর আগে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর ফোনালাপ ভাইরাল হয়। পরে ঐ ফোনালাপকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ একাধিক অভিযোগ উঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে এই আবেদন করা হয়।
আরো পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাচ্ছেন বশেমুরবিপ্রবির সাত শিক্ষার্থী
আবেদন পত্রে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে প্রকাশিত যৌন হয়রানি, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আনীত অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে তাকে একাডেমিক সকল কার্যাবলি থেকে অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানানো হয়।
এরইমধ্যে ঐ বিভাগীয় সভাপতির নানা অনৈতিক ও অসঙ্গতিপূর্ণ কাজে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই পরীক্ষার ফলাফল ও সার্টিফিকেটের জন্য বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। তার ভয়ে জিম্মি থাকা শিক্ষার্থীদের মুখ খুলতে চান না অনেকেই।
তাদের দাবি, তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলতে গেলে আমাদের উপরে নানা চাপ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু আমাদের এই শিক্ষকের বিষয়টি ব্যাতিক্রম। তিনি বিভিন্ন সময় জোরপূর্বক একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করে থাকেন। অনেকের পরীক্ষার উত্তর পত্রে নাম্বার বাড়ানো-কমানোও তার ইচ্ছামত হয়ে থাকে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
আরো পড়ুন: রাবির ৫৪ শিক্ষক পেলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ
এ বিষয়ে কৃষি অনুষদের ডিন ড. মো. মোজাহার আলীর কাছে তার বিষয়টি তুললে তিনি বলেন, তার বিষয়ে পরীক্ষা বিষয়ক অনিয়মের বিষয়টি সত্য। তবে পরে তা শিক্ষকদের সম্মতিতে সংশোধনও করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত যৌন হয়রানির বিষয়ে ভুক্তভোগীর কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তার অব্যাহতির ব্যাপারটি রিজেন্ট বোর্ড কর্তৃক সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগের শিক্ষক আনিসুজ্জামানের ব্যাপারে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ আসছে। অফিসিয়াল নিয়মানুযায়ী আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকে ঐ বিভাগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। শিক্ষক হিসেবে ঐ বিভাগে যোগদানের আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেডএম