করোনার মতো সংক্রামক রোগ থেকে বাঁচাবে এই অ্যাপ
প্রকাশিত: ১৩:২৮ ১৭ জানুয়ারি ২০২১

iWorkSafe) নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা
মানুষের শারীরিক অবস্থা ও কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের জন্য আইওয়ার্কসেফ (iWorkSafe) নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
অ্যাপটির মাধ্যমে কলকারখানা, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে যেমন জানা যাবে, তেমনি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তার সংস্পর্শ এড়ানো যাবে।
গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়েছে যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে।
প্রকল্প তদারকির দায়িত্বে ছিলেন নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুফতি মাহমুদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির শিক্ষক ড. মো. শামীম কায়সার ও ড. শামীম আল মামুন।
তারা বলছেন, ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যের ডাটা ও স্মার্টফোনের বিভিন্ন সেন্সর থেকে ডাটা সংগ্রহ করে ব্যবহারকারীকে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম এই অ্যাপ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, অ্যাপ্লিকেশনটি ব্লুটুথ ব্যবহার করে রিয়েলটাইম কন্টাক্ট সেভ করে দুজন ব্যবহারকারীর মধ্যে দূরত্ব পরিমাপ করতে পারে। ব্যবহারকারী অ্যাপটিতে বাস্তবায়িত মানচিত্রের সাহায্যে লকডাউন অঞ্চল এবং আইসোলেশনে থাকা রোগীদের গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারবে। ব্যবহারকারীর শারীরিক অবস্থা, উপসর্গ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মেশিনের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনুমান করতেও সক্ষম।
ড. মুফতি মাহমুদ জানান, আইওয়ার্কসেইফ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময়ে খুবই যুগোপযোগী ও প্রয়োজনীয় একটি উদ্ভাবন। এটি কলকারখান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে, যাতে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছি।
তিনি আরো বলেন, এই অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে করোনাভাইরাসসহ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টিকারী যেকোনো ভাইরাস সংক্রমণের স্ক্রিনিং করা যাবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, যেকোনো দেশে যেসব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার মতো পরিবেশ নেই, এই অ্যাপের মাধ্যমে সেখানে কর্মরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে। আইওয়ার্কসেইফ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারব।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক ড. মো. শামীম কায়সার ও সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম আল মামুন বলেন, এই মোবাইল অ্যাপটি করোনাভাইরাসসহ ভবিষ্যতের যেকোনো মহামারি থেকে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের শিক্ষা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুরক্ষা প্রদান করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পারবে।
আইওয়ার্কসেইফ অ্যাপটি তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন কোনো সংক্রামক রোগ মহামারি আকার ধারণের আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সরকার, গবেষক এবং চিকিৎসককে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানিয়ে দিতে সক্ষম বলেও জানান তারা।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেডএম