সংবাদ সম্প্রসারণ, ডিবিসি নিউজ ২০০০ ঘটিকা ২১ জানুয়ারি ২০২১
2021-01-21 20:00:00
অ্যাডভোকেট এলিনা খানঃ
আরমান বিহারির মতো ঘটনাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলে। ১৯৭১ সালে ভানু মিয়া নামে একজন লোক ছিল, যে ২১ বছর ৮ মাস বিনা বিচারে আটক ছিল জেলখানায়। লোকটা ঢুকেছিল ৩২ বছর বয়সে, এখন তিনি মারা গেল ৫৬ বা ৬০ বছর বয়সে। এই যে ২১ বছর ৮ মাস থাকার কারণে তার ক্ষতিপূরণের মামলার ক্ষতিপূরণ না পেয়েই তিনি মারা যান, এটা বাংলাদেশের জন্য একটা বড় বিষয়। আজকে আমরা দেখছি আরমানের যে বিষয়টা, আপনি দেখেন ক্ষতিপূরণের যে বিষয়, ২০ লাখ টাকার কথা মাননীয় হাইকোর্ট হয়তো এটা দিয়েছেন, আমরা সেটায় খুশি। কিন্তু আপিল এটা আপিল বিভাগে যাবে, সেখানে আবার এটা থাকবে কি থাকবে না সেটাও নির্ধারণ করা হবে। কিন্তু আমি যেটা বলতে চাই, ক্ষতিপূরণটা দেবেন কোথা থেকে বা রাষ্ট্র কোথা থেকে এই জিনিসটাকে সমন্বয় করবে? আমাদের আইনে এই ধরনের কোনো বিধান রাখা হয়নি। আমাদের আইনে যেটা বলা হয়েছে যে, তার ক্ষতিপূরণ নির্ভর হবে যে সে কি কাজ করতো, প্রতিদিন তার আয় কি ছিল, সেটার উপর নির্ভর করে। এই আইন কিন্তু সংশোধন হয়নি। হাইকোর্ট একটা অর্ডার দেন, মাননীয় হাইকোর্টের অর্ডারের ভিত্তিতে অনেক সময় আমরা আপিল বিভাগেও দেখেছি কম বেশি হয় বা পাচ্ছে কি পাচ্ছে না এরকম অবস্থায় আছে।
জুলহাস আলমঃ
বিচার বিভাগের যে দুর্বলতা আছে এবং আমাদের যথাযথ সংস্থাগুলোর যে দুর্বলতা আছে, এখানে যে দুর্নীতি আছে। কিছুদিন আগে একটি ঘটনা ঘটে নারয়ণগঞ্জে, যাকে হত্যা করা হয়েছে বলে কয়েকজনের শাস্তি হয়ে গেছে এবং তারা নানাভাবে ক্ষতিপূরণও নিয়েছে কিন্তু দেখা গেল হঠাৎ করে তিনি বাড়িতে এসে হাজির হয়েছে অনেক বছর পরে। তাহলে এখানে কি হয়েছে ঘটনাগুলো? সবচেয়ে দুঃখজনক হলো যে, যাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। আপনি দেখেন কি ভয়ঙ্কর, তার মানে এটি কি প্রক্রিয়ায় হয়েছে?
যারা একটি মানুষ, একটি ঘটনাই ঘটেনি, তাহলে যাদেরকে আপনি শাস্তি দিচ্ছেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে যে তারা খুন করেছে, কত ভয়ঙ্কর হতে পারে এই প্রক্রিয়াটি। মানুষের মধ্যে এখন একটা আতঙ্ক আছে এই ভ্যাকসিন নিয়ে যে তারা দিবে কি দিবে না। কারণ ভ্যাকসিন দেয়ার পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যে। তবে এখন এটা প্রমাণিত যে, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী নয়, ইতিমধ্যে যে দেশগুলো ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ করেদিয়েছিল তারা আবার ভ্যাকসিনেশন শুরু করেছে। এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হলো মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা।
মাসুদ করিমঃ
এলিনা খান এবং জুলহাস বললেন যে, বিষয়গুলিতে দুর্বলতা এবং বিষয়গুলি ত্রুটিপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরিষ্কার যে, আমাদের ন্যায় বিচার পাওয়ার যে অধিকার মানুষের, সেই অধিকার মানুষ পাচ্ছে না। সুতরাং এই বিচার বিভাগের ব্যাপারে আমরা আমাদের মিডিয়া থেকে একটা রুল প্লে করতে পারি। কখন আমাদের দেশে একটা বড় সমস্যা হলো যে কনটেন্ট অব কোর্টে ফেলে দেয়। অনেক দেশে এই ব্যাপার নেই, কনটেন্ট অব কোর্ট নেই, সমালোচনা করা যায়। আমাদের দেশে দুইটি জিনিস আছে পাশাপাশি, একটা হলো, একটা হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা, আরেকটা হলো কনটেন্ট অব কোর্ট। যে টিকাটা ভারত থেকে এসেছে, এটা আমাদের এই অঞ্চলের জন্য খুবই উপযুক্ত। ভারতের এই উপহারের জন্য আমরা খুবই খুশি ও কৃতজ্ঞ। আমরা চাই সব কয়টা প্রতিবেশী দেশ একত্রিত হয়ে কাজ করুক। একসাথে কাজ না করলে এই সংকট থেকে একা মুক্তি পাওয়া যাবে না। আমি মনে করি, সেরাম বা অন্যান্য ইন্সটিটিউট এর মতো অন্যদের দিকে না তাকিয়ে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দক্ষ জনগোষ্টী তৈরি করতে হবে।
জয়ন্ত রায় চৌধুরীঃ
আমি যতদূর জানি যে, ২০ লক্ষ ডোজ যেটা আপনাদের দেওয়া হয়েছে সেটা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য। এছাড়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার আরও ডোজ কেনার জন্য সিরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে একটা চুক্তি করে রেখেছেন এবং কিছু টাকাও দেওয়া হয়েছে, যেটা আস্তে আস্তে আসবে। আমরা প্রথমেই আমাদের প্রতিবেশী দেশদের ডোজ সাপ্লাই করছি। এই যে ভ্যাকসিনটা তৈরি হচ্ছে এটা প্রথম শ্রেণির এবং অনুমোদনও পেয়েছে অনেকগুলো দেশের কাছ থেকে। বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক গত কয়েক বছরে অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের আরেকটা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে এবং এটা যদি সফল হয় তাহলে আমরা অনেক সস্তায় এই ভ্যাকসিন সবাইকে দিতে পারবো।