নিউজ আওয়ার এক্সট্রা এটিএন নিউজ ২১১০ ঘটিকা ০৫ ডিসেম্বর ২০২০
2020-12-05 21:30:00
আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপিঃ
জনসভায় আমি বিস্তারিতভাবে বলেছি, এরা আলেম সম্প্রদায় কলঙ্ক, যারা ওলামা-মাশায়েখ আছেন, যারা কোরআন এবং হাদিসের অনুসারী তাদের সম্পর্কে কিছু না কিন্তু যারা কুরআন, হাদিসের অপব্যাখ্যা করে একশ্রেণীর আলেম, যারা কথায় কথায় মুনাফিক বলে, কাফের বলে তাদের কাছে প্রশ্ন? দেশে কত ধরনের ইসু আছে ধর্মীয় ব্যাপারে, মানুষকে সৎ পথে রাখার জন্য সেগুলো সব বাদ দিয়ে এবং হঠাৎ করে এই ভাস্কর্যের কথা কেন বলা হয়েছে সেটা আমরা বুঝতে পারি। যেহেতু হেফাজতের সাথে তারা জড়িত, অধিকাংশ হেফাজতের আলেমরা বর্তমানে যারা নেতৃত্বে আছে, তাদের নেতৃত্তের উপর আস্থাশীল নয়, তাই হেফাজতের জঙ্গী মনোভাব নিয়ে মাঠে নামানো হয়তো তাদের ইচ্ছা। বাংলাদেশ যেভাবে আজকে সফল রাষ্ট্রনায়ক, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অত্যন্ত সফলভাবে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং হেফাজত কোন ইস্যুতে আঘাত করবে না পেয়ে ধর্মকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর কুমতলব নিয়ে হঠাৎ করে এই ধরনের অপপ্রচার তারা চালাচ্ছে।
মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরীঃ
আমি এই ভাস্কর্য নিয়ে তান্ডব সৃষ্টির পরিকল্পনা বলে আসছিলাম, যে কওমি অঙ্গন থেকে জামাত ইসলাম কি লক্ষ্যে তারা প্রশিক্ষণ থেকে মাঠে ছেড়ে, বিভিন্ন কথা বলে সারাদেশে যাতে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে পারে, তার জন্য এদেশের মুসলমানদের বিভ্রান্ত করতে পারে। সরকার এবং গোয়েন্দা বাহিনীকে আমি সতর্ক করেছিলাম যে জামাত ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা তিনি পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছিলেন ঠিকই কিন্তু ভারতের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলেন। মাওলানা মওদুদী ইউনাইটেড ভারতকে সমর্থন করেননি, তিনি ওইখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পাকানোর জন্য ১৯৪১ সালে হায়দ্রাবাদে পৃন্স কনফারেন্স
বলছিলেন, যে ভারত স্বাধীন হোক বা না হোক আমাদের কিছু যায় আসে না এবং আমি ১ খন্ড চাই যেখানে হুকুম হতে এলাহি কায়েম করব, তখন সব আলেমরা বলছেন এই লোকটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে ভারত স্বাধীনতা যাতে না পায় সেই চেষ্টা করেছে। জামাত ইসলাম কি করেছে আমরা সবাই জানি, এবার যে কয়জন তথাকথিত আল্লামা ভাস্কর্য নিয়ে যে সমস্ত উদ্ধত্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন ওয়াজ মাহফিলের নামে এবং জাতির পিতা কে অসম্মান করার জন্য এখন পর্যন্ত শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেনো, মাত্র ২০-১৫ জন মানুষ দেশটাকে ঊশৃংখল করে ফেলল।
এএইচএম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিকঃ
আমরা যদি ২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরের দিকে তাকাই কি দেখব, সেখানে প্রায় ৬০-৭০% ছিল ১০-১২ বছরের শিশু এবং এদের সংখ্যা বেশি নয় সুতরাং ওদেরকে ভয় পাওয়ার কোন কারণ আমি দেখিনা। সেই ৫ ই মে ঘটনার দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখতে পাবেন তারা ৩ টি ধমক খেয়ে এরা যেভাবে পালিয়ে গিয়েছিল তাতে পরিষ্কার মেয়েরা কত দূর বল এবং এদের আসলে পায়ের নিচে মাটি নেই, সেই দিন যদি বাবুনগরীকে গ্রেপ্তার না করতো তাহলে মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলত। আমি মনে করি এই যে বীর মুক্তিযুদ্ধা তারা সঠিক কথা বলেছেন, আইন কারো হাতের না কিন্তু এদের বিচার হতে হবে, এদের বিচার হচ্ছেনা বলেই তাদের আস্পর্ধা এত বেড়ে গেছে, তারা মাথার উপর উঠে গেছে এখন তাদের মাথা থেকে নামাতে হবে। তারা যে অপরাধ করেছে সেই অপরাধ কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ এবং বঙ্গবন্ধুর মানে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে কারও কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়, উনি সংবিধানের অংশ।
এম এ মান্নান এমপিঃ
কুষ্টিয়ায় যে অপকর্ম করেছে এতে পরিষ্কার ধিক্কার জানাই, যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছে, সংবিধান লঙ্গের অপরাধ করেছে, যতই আমরা কথা বলি না কেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা একটা নির্বাচিত আইনের ধারা শাসিত সরকার, কুষ্টিয়ায় একটা ছোট শহর কারা এই কাণ্ড করেছে, আমার ধারণা আমাদের যে নিরাপত্তা বাহিনী আছে এবং যাদের দায়িত্ব দেয়া আছে তারা নিশ্চয়ই খুঁজে বের করবে, আমার দাবি থাকবে এদেরকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ পরিমাণ শাস্তির বিধান করা জরুরী। পদ্মা সেতু স্বপ্ন বাস্তবায়নে যারা বিরোধিতা করেছিল তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছে যে আমরাই পদ্মা সেতু করব এবং সেদিন যে ঘোষণা ছিল আর এটা বাস্তবায়ন হলো, তার যে বাস্তবায়ন সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের গৌরব। হেফাজতে ইসলামের মধ্যে জাতির প্রতি একটা অবজ্ঞা আছে, আমি যেমন আমার বাবার নাম অস্বীকার করতে পারিনা কিন্তু এরা করে এবং এরা করে আরো আনন্দ পায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন তাদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াঃ
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু অংশগ্রহণ করেন এবং আওয়ামী লীগ ও পাকিস্তান মিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন, স্বাভাবিকভাবে ক্ষমতার ভাগীদার আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু। বর্তমানে যারা ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধিতা করছে তারা দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় পর্যায়ক্রমে ষড়যন্ত্র করে, শেষ পর্যন্ত রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুকে ভাষণ দিতে হয়েছে এবং তখনো স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়নি। ২০১০ সালের প্রথম দিক থেকে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করি এবং পদ্মা সেতু একটা পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, এর ফলে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র, মিথ্যা অপবাদ ঠেকাতে মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর দিকে এগিয়ে যাই। অনেকে ভেবেছে পদ্মা সেতু করার জন্য বাংলাদেশের সামর্থ্য নেই, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুধাবন করতে পেরেছে যে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় আজকে আমরা পদ্মা সেতু পেয়েছি।
ড. রেজাউল হক চাতুরীঃ
আমাদের দেশের মৌলবাদী গোষ্ঠী বা ধর্ম নিয়ে যারা ব্যবসার চিন্তা-চেতনায় মগ্ন থাকেন এদের আসলে ধারাবাহিকতা এবং তৃতীয় ধাপে জঙ্গী মনোভাব নিয়ে লালনের ভাস্কর্য এয়ারপোর্ট থেকে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের প্রথম জঙ্গী চিন্তার বাস্তবায়ন হয়েছিল। এই জঙ্গিবাদী গোষ্টিকে দেখবেন তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে বলবে যে আমাদের স্মৃতিসৌধ, স্বাধীনতা স্তম্ভ গুলোকে তারা গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফতোয়া টেনে নিয়ে আসবে এবং আমি বিনয়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি এই জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী এদের সংখ্যা কোনভাবে কম নয়। আমাদের দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এবং রাজনীতিবিদরা বয়সের কারণে দেখা গেছে এদেরকে বিভিন্নভাবে না বুঝে ধর্মীয় দুর্বলতার দিক থেকে এদেরকে বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে তাদের যাকাতের পয়সা দিয়ে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অসত্ উদ্দেশ্যে এই ভাস্কর্য এবং মূর্তিকে এখানে নিয়ে এসেছে হেফাজত ইসলাম, পাকিস্তানসহ আরো দেশ আছে সেখানেও তো মূর্তি আছে, এখানে ধর্ম টেনে আনার কোন কারণ বা সুযোগ নেই।