জনতন্ত্র গণতন্ত্র নিউজ ২৪ ২০০০ ঘটিকা ০৫ ডিসেম্বর ২০২০
2020-12-05 20:00:00
নূর আহমেদ বকুলঃ
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপরে দাড়িয়ে আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। ১৭ নভেম্বর সর্বশেষ যখন তিন জোটের রুপরেখা প্রকাশ হলো তখন যে চুক্তি হয়েছিল তিনটি দলের, সেই চুক্তিতে একটি কথায় ছিল যারাই ক্ষমতায় যায় না কেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর দাড়িয়ে আমরা দেশ পরিচালনা করবো। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, দেশের দুর্ভাগ্য, সেই তিন জোটের মধ্যে যে যখন ক্ষমতায় এসেছে তার পরবর্তীতে কেউ সেই চুক্তির প্রতি কর্ণপাত করলেন না। গণতন্ত্র সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর যে অপশক্তিটি ৭৫ পর্যন্ত পালিয়ে ছিল, পরে তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে পুণর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং বাংলাদের রাষ্ট্রদর্শনকে খুন করা হলো এবং সেটি করেছেন একজন জেনারেল, সেই সাথে বঙ্গবন্ধু হত্যা, এই ঘটনাগুলোর দ্বারা মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে শেষ করে দেয়া হয়েছে।
নাজমুল হক প্রধানঃ
বর্তমান সরকার মাঠ থেকে রাজনীতি করেই এই জায়গায় এসেছেন। (২০:০৫:৫৭) আমার দুর্ভাগ্য এবং দুঃখের বিষয় হলো, দেশে প্যারাসুট রাজনীতিবিদ যারা ছিলেন তাদের সময়ও আমরা দেখেছি ক্ষমতার সঙ্গে দুর্নীতি এবং সাম্প্রদায়িকতা কেমন যেন হাত ধরাধরি করে চলেছে কিন্তু একজন নির্বাচিত সরকার, যে সরকার ক্ষমতায় আছে এই সরকারের সময়ও এই দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ বা সাম্প্রদায়িক শক্তি হাত ধরাধরি করে চলবে, এটা আমার ভাবতেও অবাক লাগে (২০:০৬:২১)। (২০:০৭:৪০) আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বর্ডারের সমস্যা সমাধান করেছেন, সমুদ্র সীমার সমাধান করেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সমাপ্ত করেছেন, সবই ঠিক আছে এবং এটা দায়িত্ব ছিল
করেছেন কিন্তু আমরা কি এটা নিশ্চিত করতে পারি না যে, যার ভোট সেই দিবে, যাকে খুশি তাকে দেবে। এটা আমরা কি স্থির করতে পারিনা। আমরা লজ্জিত হচ্ছি যে আসলেই কি জনগণ তার ভোট সুষ্টুভাবে প্রয়োগ করতে পারবে নাকি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি থাকবে নাকি দিনের ভোট রাতে হবে? এই কথার যখন উত্তর খুঁজে পাইনা তখনই হতাশা আসে এবং তখনই এই উত্তর খোঁজার ফাঁক দিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি তারা ষড়যন্ত্র করতে সুযোগ পায় (২০:০৮:৩০)। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতার সুযোগ যদি থাকতো তবে দুর্নীতি অনেক কমে যেতো।
খায়রুল কবির খোকনঃ
এরশাদ পতনের পর তিন জোটের যে রুপরেখা প্রকাশিত হয়েছিল তা আমরা সঠিকভাবে মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছি এবং এর দায় আমাদের সবাইকে নিতে হবে। (২০:১৩:২১) আজকে দিনের ভোট রাতে হচ্ছে, এই কারণে তো আমরা দেশকে স্বাধীন করিনি। গণতন্ত্রের জন্যে, ভোটের অধিকারের জন্যে, আমাদের মৌলিক অধিকারের জন্যে, ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্যে বা মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্যে আমরা লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম, সেই স্বাধীন দেশে ৪৯ বছর পরে এসে আজকে গণতন্ত্রের জন্য কথা বলতে হচ্ছে, লড়াই করতে হচ্ছে , জীবন দিতে হচ্ছে এবং যে ভোটাধিকার আমার মৌলিক অধিকার সেই অধিকার থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা কি অনন্তকাল সেই ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করবো। আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী একটি দল, এই দেশে তারা সকল আন্দোলনে গৌরবোজ্জল ইতিহাস রেখেছে, সেই আওয়ামী লীগের মতো একটি দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে যদি
আজকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে এবং নির্বাচন কমিশনকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে (২০:১৪:২১)। (২০:৪২:০৯) আজকে দুর্নীতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়েছে এবং এটা এমন এক সর্বগ্রাসী, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে দুর্নীতি একটা ভয়ঙ্কর রুপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার ১২ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন, এই ১২ বছরের মধ্যে তারা দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা দূরে থাক আজকে আমরা দেখি দুর্নীতি প্রতিযোগীতা নিয়ে শুরু হয়েছে (২০:৪২:৩৭)।
অসীম কুমার উকিলঃ
আমরা যখন সারাদেশের দপ্তরগুলোতে গণজমায়েত করেছি তখন সাধারণ মানুষও মনে করেছে ছাত্ররা যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখন নিশ্চই এরশাদের পতন হবে। এরশাদের পতনের পর বাংলাদেশটা কেন বদল হলো? আমরা ব্যালট বাক্স করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছি, একটি বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতি করেছি, ক্যাম্পাস সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, তার পরেও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারায় যে সংস্থাগুলো গণতন্ত্রের পিলার হিসেবে পরিচিত, সেই জায়গাগুলো তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি, এর জন্যই আজকে আমাদের নতুন করে এই কথাগুলো বলতে হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন বা উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, এটা বিএনপি’র দুর্বলতা ও ব্যর্থতা। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছে এবং দুদক আজকে শক্তিশালী। আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে অতিশীর্ঘই আমরা দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করবো।