মুক্তকণ্ঠ, চ্যানেল-২৪ টিভি, ২৩০০ ঘটিকা ০৪ ডিসেম্বর ২০২০
2020-12-04 23:00:00
ড. মনজুর শওকতঃ
সারা বিশ্বের মানুষ জেনেছে, ব্রিটেন একটি ভ্যাকসিন পাইজার অ্যাপ্রুভ করেছে। এই ভ্যাকসিনটি যেসব আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রয়োগ করা হবে তার মধ্যে ৯৫ শতাংশ রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চলে আসবে। আগামী সপ্তাহের আট-নয় তারিখে এটা প্রয়োগ করা হবে। এই ভ্যাকসিনটিকে ঠান্ডায় সংরক্ষণ করতে হবে যদি তা না করা হয় তবে ভ্যাকসিনটি নষ্ট হয়ে যাবে। যুক্তরাজ্যের ৫০টির মতো হসপিটালে এই ধরনের ভ্যাকসিন সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এই মাসের মধ্যেই যুক্তরাজ্যে প্রায় ১ মিলিয়ন ডোজ এসে যাবে। এখানে ব্রিটেন সাহসিকতার পরিচয় দেখিয়েছে। ব্রিটেন ভ্যাকসিন প্রয়োগে নীতিমালা করেছে সেটা হলো, আন্ডার-19 এবং যারা প্রেগনেন্ট তাদেরকে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে না।
ডা. তারেক হোসেনঃ
পাইজারের ভ্যাকসিনটি বাংলাদেশের জন্য উপযোগী নয়। কারণ এই ভ্যাকসিনটিকে মাইনাস ৭০-৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশের এয়ারপোর্ট পর্যন্ত হয়তো সেই দেশের এয়ারলাইনস পৌঁছে দিয়ে যাবে কিন্তু সেখান থেকে বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলে সেই ভ্যাকসিন পৌঁছানো সম্ভব নয়। সুতরাং পাইজার আমাদের দেশের জন্য উপযুক্ত নয়। ভ্যাকসিন নিয়ে এত উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে যে আমাদের সাধারণ মানুষের মনে একটা ধারণা চলে এসেছে যে, ভ্যাকসিন চলে এসেছে। যার ফলে স্বাস্থ্যবিধির ওপর এর প্রভাব পরছে। কো-ভ্যাক্স একটি নয় অনেকগুলো ভ্যাকসিন নিয়ে ডিল করছে। এখান থেকে আমরা ভ্যাকসিন পাবো এটা সম্ভাবনা খুব বেশি। এই নীতিমালা আমাদের নয় ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের। এটা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। কিছুদিন ধরে মাস্ক পরার প্রবণতা বেড়েছে এর কারণ সব জায়গায় এর অ্যাকটিভিটি শুরু হয়েছে। শুধু সরকারের নয় সিটিজেন হিসেবে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের পুলিশ বাহিনী কাউকে মাস্ক প্রদান করছে আবার কাউকে জরিমানা করছে, এটা একটা ভাল উদ্যোগ।
অধ্যাপক ড. লিয়াকত আলিঃ
গ্রেট ব্রিটেন পাইজারের প্রয়োগ করছে সেখানকার যে বাস্তবতা তার সাথে আমাদের দেশের বাস্তবতা এক নয়। এগুলো যদি আমরা কিনেও আনি তবে এই ভাইরাস সংরক্ষণে আমাদের সক্ষমতা খুবই সীমিত কারণ এই ভাইরাসটি মাইনাস ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যখন বিদ্যুৎ চলে যাবে তখন টেম্পারেচার মেইনটেইন করা অনেক কঠিন হয়ে পরবে। আমাদেরকে অক্সফোর্ডের এস্ট্রোজেনেকা এবং অন্যান্য ভাইরাসের দিকে মনোযোগী হতে হবে। আমাদের মতো দেশে যেখানে প্রতিটি অর্থের মূল্য অনেক বেশি সেখানে একটি ভ্যাকসিন কিনতেই আমরা হিমশিম খেয়ে যাব। সুতরাং কো-ভ্যাক্স ভ্যাকসিনটি আমাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী, সেই ভ্যাকসিনটিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। ভ্যাকসিনগুলো অনেক আগে থেকেই তৈরি হচ্ছে, কাজেই সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছে ভালো স্টক তৈরি হয়েছে, এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। এই কোম্পানিগুলো আগে থেকেই ঝুঁকি নিয়েছিলো। আশা করা যায় অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকা তাদের রেজাল্ট করে ফেলবে। সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান বলেছেন, আগে ভারতীয় জনগণ পাবে তারপরে অন্য কেউ পাবে। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, জানুয়ারির মধ্যে ভ্যাকসিন আসবে, এর জন্য উদ্যোগী হতে হবে। বর্তমানে ভ্যাকসিন রাজনীতির বড় হাতিয়ার হয়ে গিয়েছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ফ্রন্টলাইনারদের গুরুত্ব দেয়া হবে। তবে ফ্রন্টলাইনারের তালিকা আগে করা উচিত। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ভাইরাসকে মোকাবেলা করার জন্য সতর্ক করেছেন। তবে আমার কাছে মনে হয়, তার এই নির্দেশটি সবার মেনে চলা উচিত। ইতিমধ্যেই করোনা রোগী বাড়ার সাথে সাথে হসপিটালগুলোতে চাপ বেড়েছে। এর জন্য জনসমাগমের উপর কঠোর ব্যবস্থাপনা একই সাথে মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।