একাত্তর সংযোগ একাত্তর টিভি ২০০০ ঘটিকা ০৩ ডিসেম্বর ২০২০
2020-12-03 20:00:00
রাশেদ খান মেননঃ
১৪ দলে যোগদানে মূল উদ্দেশ্য ছিলো বিএনপি জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে আন্দোলন, কারণ তাদের রাজনীতিটাই ছিলো সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী রাজনীতির। আমরা ১৪ দল যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার করার জন্য মানুষকে জাগ্রত করেছিলাম যার কারণে তাদের বিচার করা সরকারের পক্ষে অনেক সহজ হয়েছে। আমি স্পষ্টভাবে বলেছি ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কোন আবকাশ বাংলাদেশে নেই। এই ভাস্কর্যটা শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য না এবং এটা কোন মূর্তি না, এই ভাস্কর্যে বিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। (২০:৩৩:২৮) যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় কালকে কেন্দ্র করে যখন সমস্ত ইসলামী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে ফেললো এবং হেফাজত যখন তাদের অভূর্থান ঘটানোর চেষ্টা করলো তখন আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলে তাদের মধ্যে বিভাজন চেষ্টা করেছে। আমাদের তরফ থেকে স্পষ্ট করে বলেছি এই কৌশল কিন্তু নীতিকে পরাজিত করে দিচ্ছে! নীতিকে বাদ দিয়ে কৌশল কখনো টিকে না এবং সেই কৌশল যে টিকছে না সেটা এখন আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি (২০:৩৪:০৯)।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীঃ
(২০:০৯:৫৪) আজকে আলেমদের যেই আওয়াজটা আমরা শুনছি এটা সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। লালনের ভাস্কর্যটা যখন সরানো হয়েছিলো তখন সরকারের যেই নম্র মনভাব ছিলো সেটাই তাদের উৎসাহিত করছে অন্যায় আচরণের। এসব সৃষ্টি হয়েছে মাদ্রাসার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা ধার্য করা, আধুনিকরন না করে পুরাতন দিকে উসকে দেয়া হয়েছে (২০:১০:৩২)।
আজকে কেউ না কেউ আলেম সমাজকে বিতর্কের মধ্যে জড়িয়েছে, তারা সাদাসিধে মানুষ বুঝতে পারছেনা যে তারা অন্যের হয়ে কাজ করছে। আমি ভাস্কর্যের বিষয়ে আলেমদের বলেছি যে আপনারা অযথা এর মধ্যে জড়াবেন না। (২০:১২:২২) আজকে ধর্মটাকে জরানো হয়েছে এবং এখানে অবশ্যই সরকারের মদত আছে, সরকার ভুল মদত দিয়েছেন। তার কারণটা হচ্ছে আজকে ছাত্রলীগ দুর্নামের ভাগি হয়েছে, তারা পথে বের হতে পারছিলো না! তাদের কে বের হবার একটা পথ করে দেয়া হয়েছে। এটাকে মৌলবি সাহেবদের ডুবানোর ব্যবস্থা বলতে পারেন, আবার এইসব উসকে দেয়া হচ্ছে (২০:১২:৪৮)। (২০:২৮:০০) আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অন্তরীণ হয়ে আছেন, পার্টির লোকই তার সাথে দেখা করতে পারে না। গোয়েন্দা বাহিনী এবং আমলারা যতটা সুযোগ পায় এই সুযোগরা রাজনীতিবিদরা পায় না। (২০:২৮:১২) ।
অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলালঃ
পূর্বের অনেক ঘটনার কথা আমার সিনিয়ররা বললেন এবং আমরাও জানি। (২০:১৫:১৯) রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যখন সংবিধানে স্বীকৃত থাকলো, স্বীকৃত থাকারপর কি ধর্ম নিরপেক্ষতার চেতনার কথা মুখে যতই বলুক সংবিধানিক অগ্রাধিকার পায়না। আমরা গাইবান্ধার সাঁওতাল পল্লী দেখেছি পুলিশের জেকেট পরা লোকেরা সাঁওতালদের বাড়ি ঘরে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রামুর মন্দির নতুন করে নির্মাণ করে দেয়া হয়েছ কিন্তু সেখানের প্রধান পূজারী বলেছেন যে মন্দির কাঠের জায়গায় প্রসাদ হয়েছে ভালো লাগছে কিন্তু মনটা খারাপ হয়ে যায় যখন দেখি আসামীরা চতূর্দিকে ঘোরাফেরা করে। নাসির নগরের ঘটনা, রামুর ঘটনা, কাদিয়া মিছিল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, কালশীর বিহারী কলোনীর ঘটনাসহ একটা ঘটনার বিচার এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি (২০:১৬:১৩)। ভাস্কর্যের ইস্যু নিয়ে এখন দুই পক্ষের মধ্যে আমরা হুমকি ধমকি দেখছি। সরকার যদি এখানে পর্যবেক্ষন করতে তাকে তাহলে পর্যবেক্ষনের বিষয় বিএনপিরও রয়েছে। আমার মনে হয় এই বিষয়টি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। ধর্মমন্ত্রী যে বলেছেন হক্কানী আলেমদের সাথে বসে এই সমস্যাটি সমাধাণ করা সম্ভব, আমি সেই জায়গাটাতেই থাকতে চাই। ধর্মের ব্যাখ্যা যার যারমত না দিয়ে ধর্ম পালন করা দরকার।
উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আবদুস শাহীদঃ
রাজনীতি হচ্ছে একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা। সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী চিন্তা-চেতনা প্রকাশ করার জন্য কাউকে আঘাত করাটা অসংবিধানিক কাজ। আমরা আলেম ওলামাগণদের অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি এবং মসজিদে গিয়ে তাদের বলা ইসলামের পথে চলি কিন্তু যারা আজকে এই ভাস্কর্য নিয়ে প্রতিবাদ করছে তারাও জানে যে পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নাই যেখানে ভাস্কর্য নেই। বাবুনগরী বলেছেন যে তার বাবার মূর্তি হলেও বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেবেন কিন্তু মূর্তি ও ভাস্কর্যের সাথে সঙ্গাগত পার্থক্য রয়েছে। মূর্তি হচ্ছে কোন ধর্মীয় অনুভূতিকে নিয়ে সেটাকে পূজা করা আর ভাস্কর্য হচ্ছে ইতিহাস বা সংস্কৃতিকে তুলে ধরা।