রাজকাহন ডিবিসি নিউজ ২২০০ ঘটিকা ০১ ডিসেম্বর ২০২০
2020-12-01 01:00:00
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিমঃ
রোহিঙ্গাদেরকে নিয়ে প্রথম যখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন তখন কক্সবাজারের মানুষ স্বাগত জানিয়েছে, যাদের খবর আছে তারা না খেয়ে রোহিঙ্গাদের কে খেতে দিয়েছেন এবং পর্যায়ক্রমে এখানে বলা হচ্ছে ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে, আসলে রোহিঙ্গার সংখ্যার তার চেয়ে বেশি। আমরা কিছুদিন আগে ২২ টি এনজিওর একটা টিম গভমেন্টের প্রতিনিধিসহ ভাসানচরে গিয়েছিলাম, ভাসানচর আমাদের খুব উপযোগী মনে হয়েছে এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা যে অবস্থায় বসবাস করে, সেই পরিস্থিতির চেয়ে ভাসানচর অনেক বেশি ভালো অবস্থান। কক্সবাজার অঞ্চলে যে সকল রোহিঙ্গারা আছেন তাদের ভাসানচর সম্পর্কে অনেক তথ্য অজানা রয়েছে এবং তথ্য সম্পর্কে অনেকের স্পষ্ট ধারনা নেই, আমরা যারা বিচ্ছিন্নভাবে অনেক সময় কথা বলি, যারা ভাসানচর দেখিনি তারা কিন্তু সঠিক কথা বলতে পারেনা, সেই সোনা কোথা থেকে রোহিঙ্গারা অনেক সময় বিশ্বাস করতে চায় না আসলে সেখানকার পরিস্থিতি আমাদের জন্য উপযুক্ত কিনা। আমাদের টিম যখন ভিজিট করলো আমরা কক্সবাজার সকল ক্যাম্পে কাজ করি পালস বাংলাদেশ, এখানকার বাস্তবতার আলোকে আমার মনে হয়েছে সঠিক তথ্য রোহিঙ্গাদের কাছে নেই এবং রোহিঙ্গাদের কাছে যদি সঠিক তথ্য তুলে ধরা যায় তাহলে নিশ্চিত উনারা ভাসানচরে যাবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনঃ
প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা যারা ওখানে যাবেন, এই ১ লাখ রোহিঙ্গার পরিবার যদি হয় তাহলে একটা বড় সংখ্যায় যাবে এবং এদেরকে কি লিস্ট করে পাঠানো হবে, এই দুটোর মধ্যে প্রচন্ড তফাৎ রয়েছে, সেখানে যদি তাদেরকে লিস্ট করে পাঠানো হয় তাহলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথা উঠবে। আমার মনে হয় ১ লক্ষ লোক নিয়ে আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারছি না, আমরা যে সমস্যাগুলো এখন দেখছি সে জায়গাতে কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে এবং সবাইকে যদি আমরা এভাবে ভাসানচরে নিতে পারতাম তাহলে সবথেকে ভালো হতো, তাহলে কারো আপত্তি
থাকত না। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা যারা আছে যেভাবে থাকুক সকালবেলা উঠে তারা মায়ানমারের দিকে তাকায় সেই সমস্ত প্রশ্ন গুলি থেকে যাচ্ছে এবং সেগুলোর উত্তর কারো জানা নেই। আমার মনে হয় আমরা একটু উদাসীন, আমাদের যারা দেখভাল করার কথা তারা এখনো বুঝতে পারছেনা কিভাবে কন্ট্রোল করতে হয় এবং ইয়াবা বলেন, অস্ত্র বলেন, ভেতরে কিভাবে আসে, আর ইয়াবার সাথে রোহিঙ্গা সরাসরি জড়িত, তাই আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।
মুন্সী ফয়েজ আহমদঃ
আমি মনে করি যে সেরকম বার্তা যেন না যায় সেদিকে নির্দেশনা থাকতে হবে, আমাদের বারবার উচ্চারণ করতে হবে যে এটা একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা যেখানে তারা আছে সেখানে খুব খারাপ অবস্থানে আছে এবং তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে হবে, ওখানে ভিড় কমাতে হবে যাতে নিরাপত্তা জোরদার করা যায়। ভাসানচরে কিছু লোককে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ওখানে কখনোই সরকার বলে নাই সবাইকে নিয়ে যাবে, সেখানে সে রকম পরিবেশ নেই, এত জায়গাও নেই এবং বর্তমানে যে অবকাঠামো তৈরি হয়েছে তাতে ১ লাক ১ হাজার রোহিঙ্গা নিবে আপাতত। আমি মনে করি কক্সবাজার থেকে যদি ভীড় কমে তাহলে পজিটিভ একটা বিষয় ঘটবে, কক্সবাজারের যে ক্যাম্পগুলো আছে সেখানকার ম্যানেজমেন্ট সহজ হবে এবং এখানে থেমে থাকবে আমি মনে করি না, ভবিষ্যতে ওখানে যদি আরো জায়গা থাকে, ওখানে যদি নতুন অবকাঠামো তৈরি করা যায় তাহলে ভাসানচরে আরো লোক নেওয়া সম্ভব। ইয়াবা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি সেটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তারা সরাসরি সক্রিয় হয় ঠেকাতে যাবে না কিন্তু কোথায় কি ঘটছে সেটার খবর দিতে পারে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে এবং স্থানীয় লোকজনকে কিছুটা ট্রেনিং দেওয়া যেতে পারে, আমার মনে হয় এ ধরনের সচেতনতামূলক কাজ করলে এগুলো বন্ধ হবে।