জনপ্রতিনিধি যখন দখলদার, মুক্তবাক চ্যানেল ২৪ ২৩০০ ঘটিকা ২৬ নভেম্বর ২০২০
2020-11-26 23:00:00
মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খানঃ
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে নদী দখল মুক্ত রাখা, দূষণ মুক্ত রাখা ও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ সৃষ্টি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমেই নদী রক্ষা কমিশনকে গঠন করেছেন। অবৈধ্য দক্ষল উচ্ছেদের ক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় জেলা প্রশাসককে জানাই আইন ও জরিপ অনুযায়ী তারা যাচাইয়ের পর উচ্ছেদের পদক্ষেপ নেয়। নদী রক্ষা কমিশন ২০১৩ এর আইনটি সাম্প্রতি সময়ে হাইকোর্টে রায় হয়েছে সেই রায় অনুসারে এটাকে সংশোধণ করার বিষয়টাতে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা পুরো নদীর একটা ডাটাবেজ তৈরি করতে চাচ্ছি। আমরা মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে সিএস আরএসের দাগ দিয়ে আমরা ডাটাবেজ তৈরি করছি। নদী দখল করে কোন স্থাপনা করা যাবে না হাই কোর্টের রায়কে যদি আমরা মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার করি তাহলে অনেক সুফল পাওয়া যাবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানঃ
(২৩:০৮:৪২) আওয়ামী লীগ বা বিএনপির বিষয় না, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে নদী দখলের মত কাজগুলো হয়ে যাচ্ছে, সাংঘাতিক প্রভাবশালী না হলে নদী দখলের মত কাজ করা সম্ভব না। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন গিয়ে প্রশাসনেও ডালপালা মেলেছে, প্রশাসনিক দুর্বৃত্তায়ন তো হয়েছে সাথে প্রশাসনিক দলীয়করণও হয়েছে (২৩:০৯:০৭)। (২৩:০৯:২৮) দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নদী পথে যাতায়াত করে, আমাদের যত পণ্য সরবরাহ হয় তার এক তৃতীয়াংশ হয় নদী পথে। বিআইডব্লিউটিএ’র মত সংস্থাকে দুর্বল করে রাখলাম কেন বা এই সংস্থাই দুর্বল হয়ে থাকলো কেন! সংসদ সদস্যরা তাদের কাজ করবেন, প্রশাসন তাদের কাজ করবেন। গণতন্ত্রে যে একটা চেক এন্ড ব্যালেন্স আছে আমাদের গণতন্ত্রে সেটা প্রথম থেকেই অনুপস্থিতি। আমি তো বলবো গত কয়েক বছর যাবত গণতন্ত্রের প্রকৃত যেই রূপ সেটি অনুপস্থিতি।
একেতো গনতন্ত্রের চর্চা অনুপস্থিতি ও দুর্বল, সেজন্য জবাবদিহিতার সংস্কৃতিটা গড়ে উঠেনি। আর গতকয়েক বছরের নির্বাচন আমরা সকলেই দেখেছি। গণতন্ত্র থাকা না থাকার বিষয়টা বড় হয়ে গেছে, ফলে জবাবদিহিতাও একটা বড় প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। (২৩:১০:১৮)। জবাবদিহিতা সংস্কৃতি আছে এটা আমি তখনই বলবো যখন আমি দেখবো এই দোষ করার লোক কমে গেছে, এমনটা আমি এখনো দেখছি না। জনাব আসলাম কিভাবে জায়গাটা দখলে নিলো, কিভাবে নদী ভরাট করলো এবং কিভাবে স্থাপনা করলো! এই প্রশ্নের উত্তর তো আমরা দিবো না এটা যারা প্রশাসন চালায় তাদের দিতে হবে। আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যদি রাজনৈতিক অঙ্গিকার না থাকতো তাহলে আজকে নদী রক্ষা কমিশন যেকাজটা করেছে সেই কাজটা করতে দেখতাম না। আমি মনে করি আমাদের এই জায়গায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে। বর্তমানে আমাদের আইনপ্রনেতার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ব্যবসায়ী যেটা আগে ছিলো না। আমি মনে করি আগামী সংসদে একটা ঘোষণা দেয়া উচিত যে তারা যদি ব্যবসায় করেনও জনস্বার্থের সাথে দ্বন্দ্ব হতে পারে এমন কাজ তারা করবেন না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয় কিন্তু আমার কথা হচ্ছে আমাদের প্রশাসনের লোকদের দায়িত্ব তারা কেন পালন করবে না? প্রধানমন্ত্রীকে কেন নদী রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে! আমরা চাই প্রশাসনের লোকরা তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জঃ
নদী রক্ষা কমিশন দায়িত্ব কি এবং পরবর্তীতে তারা তাদের দায়িত্ব কিভাবে পালন করবে, এটি একটি বিষয়। জনাব আসলাম কিভাবে জায়গাটা দখলে নিলো, কিভাবে নদী ভরাট করলো এবং কিভাবে স্থাপনা করলো! তিনি সেখানে যেই স্থাপনা তৈরি করেছেন সেটার অনুমতি কারা দিলো এগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। আমার মতে নদী রক্ষা কমিশনের প্রথম কাজ হওয়া দরকার নদী উদ্ধারের আগে কে কিভাবে এইসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিলো এই বিষয়ে একটা তদন্ত হওয়া করা। একজন জনপ্রতিনিধি আমাদের সমাজেরই একটা অংশ সুতরাং এই সমাজে আমরা যারা বসবাস করছি প্রত্যেকের এসব কিছুর জন্য দায়িত্বশীল। বাংলাদেশে জবাবদিহিতার অভাব থাকলে আমি আজকে এখানে আসতাম না। বাংলাদেশে বর্তমানে জবাবদিহিতার যেই অবস্থান এমটা এর আগে আমি কখনো দেখিনি। গত ১২/১৩ বছর বাংলাদেশে স্বার্থে যা প্রয়োজন তা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। অনিয়মের সাথে ২/১ জন জরিত এটা ব্যতিক্রম, এখন ব্যতিক্রম জিনিসটা যদি উদাহরণ হিসেবে টেনে আনেন সেটা ঠিক হবে না। আমরা নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী করেছি আরো শক্তিশালী করা হবে। যতটুকু নদী দখল করা হয়েছে সেগুলো উদ্ধার করা হচ্ছে এবং আরো হবে।