আগুনের মৌসুম!, নিউজ আওয়ার এক্সট্রা এটিএন নিউজ ২১৩০ ঘটিকা ২৫ নভেম্বর ২০২০
2020-11-25 21:30:00
স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনঃ
সুউচ্চ বিল্ডিং হচ্ছে তাই আগুন লাগছে, মূলত ঘটনা তা নয় যা আমরা ভাছি। প্রত্যেকটি বিল্ডিং-এ অগ্নি দূর্ঘটণা থেকে রক্ষার জন্য জ্বলাধার রাখা বাধ্যতামূলক। এই সেফটি পদক্ষেপটি যদি কেউ না গ্রহণ করে তাহলে সেই বিল্ডিং-এ গ্যস, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার কথা। এগুলো সমস্তকিছু দেখার কথা রাজউকের কিন্তু দুঃখজনক ভাবে তা করা হয় না। (২১:৩৬:১৪) তোমরা কয়জন জানো ফায়ার ব্রিগেড সশস্ত্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে? সশস্ত্র মন্ত্রণালয়ের কাছে বিডিআর আছে, র্যাব আছে, পুলিশ আছে! ফায়ার ব্রিগেড তাদের কাছে নস্যি। ফায়ার ব্রিগেড এর ব্যাপারে সশস্ত্র মন্ত্রণালয়ে কোনো কিছুই দেখভাল করে না। ফায়ার ব্রিগেডের কেউ তোমাকে এ কথা বলবে না, আমাকেই বলতে হবে কারণ আমার কাছে তথ্য আছে(২১:৩৬:৩৬)। এই যে অসমন্বয়হীনতা, একটি রাজধানীতে নগরসরকা যতদিন পর্যন্ত না করতে পারবে, জনগণের প্রতিনিধিকে সবার উপরে যতদিন স্থান না দিতে পাবে ততখন পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। (২১:৩৮:৪০)জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে, তোমরা হচ্ছো জনগণের কর্মচারী। মিলিটারি শাসন কর্মচারীকে করেছে মালিক আর জনগণকে করেছে চাকর(২১:৩৮:৫০)। এই অবস্থা থেকে বের হতে হলে গণপ্রতিনিধিদের হাতে শক্তি দিতে হব।
অধ্যাপক ডা মোঃ মাকসুদ হেলালীঃ
ঢাকা শহরে আগুন গুলি লাগার সব থেকে বড় কারণ হল অপরিকল্পিতভাবে বস্তি গড়ে ওঠা। আগুন কেন লাগে এই বিষয়টা প্রথমে জানা দরকার। আগুন লাগলে আমরা একটি কথা বলি যে শর্ট সার্কিট। আমরা এখনো সঠিকভাবে বলতে পারিনা যে আগুন কেন লেগেছিল। প্রথমে আগুন কেন লেগেছিল এ বিষয়টি তদন্ত করে তা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যবস্থা করতে হবে তাহলে এই দুর্ঘটনা কমানো যাবে বলে আমি মনে করি।আগুনের দুর্ঘটনার আরেকটি মূখ্য কারণ হলো অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া। এই অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে অনেক গণমাধ্যম অনেক প্রতিবেদন করেছেন। আমার মনে হয় এক্ষেত্রে সরকারের এই ধরনের কর্মকান্ডের উপরে একটি নিষেধাজ্ঞা অথবা নির্দিষ্ট নিয়ম এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া উচিত।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাজ্জাদ হোসাইনঃ
১৯৮১ সালের ৯ এপ্রিল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স গঠিত হয়। এই সিভিল ডিফেন্স গঠিত হওয়ার পরে সব থেকে বড় কাজ ছিল এদের ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি।অগ্নিসংযোগ কিচ্ছা কৃত কিনা অথবা অনিচ্ছাকৃত কিনা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য যে পরিমাণ প্রশিক্ষণ থাকা দরকার সে প্রশিক্ষণটা নেয়ার মতন এখন পর্যন্ত দেশে কোন একাডেমিক গড়ে ওঠেনি। ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স গঠিত হয়েছে এত বছর হয়ে গেল কিন্তু এর একটি লাভ নেই যেখানে পরীক্ষা করা যাবে যে অগ্নিসংযোগ কিভাবে ঘটেছে। দেরিতে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে একটি প্রশিক্ষণ একাডেমী করার অনুমতি দিয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত এই প্রশিক্ষণ একাডেমী এর নির্মাণকাজ এবং গঠনমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হবে।
নাজমুল আশরাফঃ
বাকি তিনজন বিজ্ঞ আলোচক যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন এই বিষয়গুলো আমাদের দেশের নতুন কিছু নয়। এ বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে চলে এসেছে কতদিন চলবে আমি জানিনা তবে এই বিষয়গুলো বদলাচ্ছি না। আগুন সম্পর্কিত একটি ঘটনা ঘটে এবং তা নিয়ে আবার একই ধরনের আলোচনা হয়। এর মধ্যে সবথেকে আলোচিত যে বিষয়টি হলো তা পোশাক কারখানায় আগুনের ঘটনা। পোশাকশিল্প আমাদের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে বলেই আমরা গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি গুলোতে আগুন নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি অতি দ্রুত। এছাড়া সর্বোপরি ফায়ার সার্ভিসের কিছু উন্নতি ও হয়েছে যেখানে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।আগুন লাগার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস অনেক দেরিতে পৌঁছেছে এরকম ঘটনা রয়েছে কিন্তু বর্তমানে ফায়ার সার্ভিস অতি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়।