রাজকাহন ডিবিসি নিউজ ২২০০ ঘটিকা ২৪ নভেম্বর ২০২০
2020-11-24 22:00:00
সিদ্দিকুর রহমানঃ আপনি যে কোনো ভাবেই চিন্তা করেন না কেনো, আমাদের গার্মেন্টসের সবচেয়ে বড় বাজার হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউএসএ। তবে করোনার কারণে পুরো ইউরোপের ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি তালমাটাল অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবার জার্মানিতে সবার আগে লকডাউন দিয়ে দেয়া হয়েছে। করোনার পুরো প্রভাব ইউরোপের দেশগুলোতে পড়েছে। এ কারণেই বায়ার’রা আমাদের আগে থেকেই বলেছে এবার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অর্ডার কম হতে পারে। এটা মেনে নিয়ে আমাদের সামনে এগুতে হবে। বায়ার’রা যদি বড় বড় অর্ডার আমাদের না দেয় সেক্ষেত্রে আমাদের অবস্থা একটু খারাপ হতে পারে। আমি মনে করছি করোনার ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসলে অর্থনীতি কিছুটা চাঙ্গা হবে। তবে এটা বলতে পারি আমাদের অর্থনীতি একেবারে যে খারাপ পর্যায়ে রয়েছে সেটা কিন্তু নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের জীবনে করোনার যে প্রভাব ছিলো বর্তমানে এর প্রভাব কিছুটা কম। করোনাকে মোকাবেলা করে মানুষ বাঁচতে শিখেছে। বাংলাদেশ আস্তে আস্তে ডেভেলপ করছে। যখন একটি দেশ ডেভেলপ করে তখন সেই দেশের বিভিন্ন খাত শক্তিশালী হতে থাকে। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা যথেষ্ট পরিমাণ পরিশ্রম করে থাকে।
আব্দুল মাতলুব আহমাদঃ যেসব দেশে আমরা আমাদের পণ্য রপ্তানি করে থাকি করোনার ধাক্কা সেই সব দেশেই আগে লাগছে। এটা খুবই চিন্তার বিষয়। তবে করোনা মোকাবিলায় এবারে আমাদের প্রস্তুতি অনেক বেশি। করোনার ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আগে থেকেই সতর্ক করে দিয়েছেন। সবাইকে মাস্ক ব্যবহারে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন নো মাস্ক, নো সার্ভিস। আমরাও জানি মাস্ক পড়লে করোনা থেকে আমরা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ পার্সেন্ট নিরাপদ। ইউরোপ, আমেরিকাতে যেভাবে করোনা এ্যাটাক করেছে, প্রস্তুতি ভালো থাকার কারণে বাংলাদেশে ঠিক সেইভাবে এ্যাটাক করতে পারে নাই। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে দীর্ঘসময় লকডাউন দিয়ে অর্থনীতি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। আমাদেরকে জীবন ও জীবিকা একসাথে টিকিয়ে রাখতে হবে। আপনারা একটা জিনিস লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেগা প্রজেক্টগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং করোনার কারণে এই প্রজেক্টগুলো থেমে থাকেনি। আমরা দেখেছি মেগা প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন করতে ভারতের থেকে চায়না আমাদেরকে বেশি সাহায্য করে থাকে। এর কারণেই আমরা চায়নার দিকে ঝুকে যাচ্ছি। তবে আমাদের নীতি সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়।
ড. আহসান এইচ মনসুরঃ করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে ঠিকই, একইভাবে আমাদের দেশেও এর কিছুটা ছোঁয়া লেগেছে। তবে এতে ব্যাপক ক্ষতি হবে এটা আমি মনে করি না। করোনার কারণে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কিছুটা থমকে গিয়েছিলো। তবে আস্তে আস্তে সেটা আবার সচল হয়েছে। দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে সরকার যদি কিছুটা ব্যায় বেশিও করে তবে সেটাতে ক্ষতির কিছু নেই। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলো। বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলো প্রণোদনা ঠিকভাবে পেয়েছে তবে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রণোদনা পেতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এজন্য সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। সত্যিকার অর্থে বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফান্ডামেন্টালি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমাদেরকে নিজেদের অর্থের প্রবাহ বাড়াতে হবে। প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতির কারণে ব্যয় বাড়ে। তবে সরকার যদি সচেষ্ট থাকে তবে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
|
---|