মুক্তবাক চ্যানেল ২৪ ২৩০০ ঘটিকা ২৩ নভেম্বর ২০২০
2020-11-23 23:00:00
চৌধুরী মহিদুল হকঃ
সব ব্যবসায়ীরা অর্থ পাচারের সাথে যুক্ত না। ব্যবসায়ীরা আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার করে থাকে। আমলাদের টাকার উৎস হতে পারে দুর্নীতি করে আহরণ করা অর্থ, তারা হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার করে থাকে। এটা ছাড়া আমলাদের অন্যকোন উপায় নেই। বিএফআইইউ, দুদক, সিআইড এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের দায়িত্ব হচ্ছে যেসব টাকা বিদেশে চলে গেছে তা ফিরিয়ে আনা। ২০১২ সালে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে কিছু ঘুষের টাকা ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো, আমরা জানি এসব টাকা ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি আছে কিন্তু পরবর্তী কালে এই প্রক্রিয়াটা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটা আবার চালু করলে অনেক লোককে ধরা যাবে এবং টাকাও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। আমাদের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, দুর্নীতি দমন কমিশন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি শক্তিশালী করা যায়, তাদের দক্ষতা যদি বাড়ানো যায় এবং শুধু কথায় না কাজের কাজ করতে পারলে অর্থপাচার অনেকখানি বন্ধ হতে পারে। সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে মানুষের মধ্যে দেশ প্রেম, নৈতিকতা ও শিক্ষা থাকা খুবই প্রয়োজন। ভালো ছাত্র হলেই বেদেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলে দেশে ভালো মানুষ বা ভালো ছাত্র, ভালো মানুষ থাকবে না। বর্তমানে মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা দিতে ভয় পায় কারণ টাকা জমা দিতে গেলে নানান প্রশ্নের সমুক্ষিন হতে হয় এবং অনেকগুলো ফর্ম পুরণ করতে হয়। আমিবলছিনা তথ্য নিবেন না তবে সাধারণ মানুষের বোধগম্ভীর হয় এবং ভয়টা যেন না পায়। সবাই কিন্তু মানি লন্ডারিং এবং টেররিস্ট ফাইন্যান্সিং এর সাথে জরিত নয়।
আবু আলম মোঃ শহিদ খানঃ
মাত্র ২৮ জনের উপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারি না যে গত ৫০ বছরে যে পরিমান অর্থ পাচার হয়েছে সেই অর্থের পাচারকারীরা হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা।
আমাদের আরো গভীরে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। ব্যবসায়ীরা আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিংয়ের করতে পারেন, আমরা জানি আমাদের দেশে এগুলো হচ্ছে এবং ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে কিছু টাকা বিদেশেই থেকে যায়, এটা পাচার হয় না। কোন যন্ত্রপাতি আমদানির সময় ওভার ইনভয়েসিং করে টাকা দিলে তখন পাচার করা হবে। আমাদের ব্যাংকিং সিস্টেম বিদেশে টাকা প্রেরণ অনুমোদন দেয় না, আপনি বিদেশে ১০০ টাকা পাঠাতে গেলে ৫০ টি প্রশ্নের সমুক্ষিন হতে হবে। অর্থপাচার বিশেষ করে হুন্ডির মাধ্যমেই হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে হচ্ছে যা অবৈধ। অর্থ পাচার বন্ধ করার রাস্তা আছে আবার রাস্তা নাই, চিচিং ফাকের মত। আমাদের মানি লন্ডারিং আইন আছে, দুর্নীতির বিচার আছে, আমাদের এজেন্সিস আছে, সরকার আছে তারা চেষ্ঠা করতে পারেন এগুলো বন্ধ করার জন্য এবং চেষ্টা নিশ্চয়ই করেন। যেকোন প্রয়োজনে আপনি যদি বিদেশে টাকা পাঠাতে চান তখন কিন্তু আপনি একটা না একটা পথ বের করবেনই, পৃথিবীর কোন দেশে মানি লন্ডারিং হয় না? আমাদের বেক্সিমকোসহ কয়েকটি কোম্পানি বাইরে কারখানা করেছেন তারা নিশ্চয়ই আইন-কানুন মেনে টাকা পাঠাতে পারছেন কিন্তু এই সুযোগ মুষ্টিও মানুষদের জন্য অবারিত করতে হবে।
শরমিন্দ নীলোর্মিঃ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন আসলে এই সংখ্যাটা বলেছেন সেটা আসলে আমাদের জানা নেই, নিশ্চয়ই তার কাছে কোন তথ্য রয়েছে তার ভিত্তিতেই বলেছেন। আমাদের অর্থ বিদেশে বৈধ পথে যাবার কোন সুযোগ নেই, বৈধ পথে ঋণ রাখারও সুযোগ নেই। আপনি ক্রেডিট কার্ডে ২ হাজার টাকার ঋণ নেয়া থাকলেও আপনাকে মেসেজ দিয়ে মনে করানো হবে যে আপনার ২ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। প্রত্যেকটা নির্বাচনের আগে টার্ম লোন বা মেয়াদী লোন অসম্ভব বেড়ে যায়। টার্ম লোনের অনুপাতে যেই শিল্পায়ন হবার কথা সেটাও কিন্তু হচ্ছে না। সাধারণ ভাবে দেখা যায় প্রতি সরকারের শেষ দিকে সরকারের রাজনৈতিক প্রভাব বলয় ভূক্ত মানুষের হাতে প্রচুর টাকা চলে যায় এই টার্ম লোনের হিসেবে। যেহেতু এই ঋণটা শিল্পায়নে ব্যবহার হচ্ছে না সে কারণে এটা খেলাপী ঋণে পরে যায়। আমার টাকা নিজের দেশে বিনিয়োগ না করে অবৈধ পথে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছি, এটা আমাদের দেশের বিনিয়োগকে প্রভাবিত করছে এবং আমাদের অনেক সুযোগকে নষ্ট করছে, কর্মসংস্থান নষ্ট হচ্ছে। আমাদের বৈধ ভাবে উপার্জিত টাকাও কিন্তু অনেক আংশে ক্যাপিটাল ফ্লাইট হিসেবে চলে যাচ্ছে। আমাদের অভিবাসন নিয়োগগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের সাথে বিদেশি সরকারের চুক্তি থাকবে হবে। হুন্ডি বন্ধরে জন্য দুদক বা পুলিশের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে কিন্তু বিশ্বের কোথাও কিন্তু হুন্ডি বন্ধ করা যায়নি। আমরা সব সময় আশাবাদি বলেই আমরা এখনো দেশে আছি।