জনতন্ত্র গণতন্ত্র নিউজ ২৪ ২০০০ ঘটিকা ২৩ নভেম্বর ২০২০
2020-11-12 20:00:00
শওগাত আলী সাগরঃ
বেগমপাড়া শব্দটি আসলে প্রতীকী শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কানাডাতে মিসেসাগা নামে একটি শহর রয়েছে, সেই শহরে মূলত কিছু মানুষ থাকেন যারা সাউথ এশিয়ান। সেখানে পুরুষরা ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন পেশায় মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি করেন, তাদের পরিবার এখানে থাকেন এবং সেই সংগ্রামী নারীদের জীবন কাহিনী নিয়ে ভারতীয় একজন পরিচালক একটি সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন বেগমপুরা। পরবর্তীতে এই বেগমপাড়া শব্দটি বাংলাদেশের কমিউনিটিতে চলে আসে এবং বাংলাদেশ থেকে লুটপাট করে টাকা নিয়ে সেখানে তাদের পরিবারকে রেখে তারা দেশে বসবাস শুরু করেছে তাদের প্রকাশের জন্য প্রতীকী শব্দ হিসেবে বেগমপাড়া শব্দটি ব্যবহৃত হয়। মূল আদি শব্দ বেগমপুরা শব্দটি হারিয়ে গিয়েছে এখন বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রতিশব্দ হিসেবে বেগমপাড়া ব্যবহৃত হয়। কানাডার সাথে বাংলাদেশের তথ্য লেনদেনের কোন চুক্তি নেই, এই ঘটনাটি বঙ্গবন্ধুর খুনি বের করার সময়ে উঠে আসে। যেহেতু এই কাঠামোটি তৈরি করা হয়নি সেহেতু তথ্য পেতে সরকারকে বেগ পেতে হবে কিন্তু যদি এই কাঠামোটি তৈরি করা যায় তাহলে বিষয়টি অনেক সহজ হয়ে যাবে। যারা টাকা পাচার করে তাদেরকে আমরা পাচারকারী হিসেবে দেখি এবং অন্যায়কারীকে শাস্তির আওতায় নিতে হবে।
ড. বদিউল আলম মজুমদারঃ
(২০:০৮:৩৩) বড় বড় দুর্নীতি হওয়ার জন্য একটা আতাতের দরকার, এই আতাতের আমার যতটুকু অভিজ্ঞতা এর সাথে ব্যবসায়ীরা জড়িত, এর সাথে সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত এবং এর সাথে রাজনীতিবিদরা জড়িত। বড় বড় দুর্নীতি (২০:০৮:৫১)। (২০:০৯:২২) একটা বড় দুর্নীতি হচ্ছিলো স্পষ্টতই হয়নি, সেটা হল ই-পাসপোর্টের ব্যাপারে। ৪-৫ হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হওয়ার কথা, সেটা অলৌকিকভাবে কমেছে কিন্তু এই ৪-৫ হাজার কোটি টাকা যে বেশি খরচ হত সেটা কিন্তু কারো পকেটে যেত এবং সেগুলো বাহিরে জমা হত (২০:০৯:৪৩)।
যারা বিদেশে যেয়ে নিজেদের যোগ্যতার ফলে সেখানে থাকতে পারছে সেখানে কোন সমস্যা নেই এবং বিশ্বায়নের এই যুগে এটাই স্বভাবিক কিন্তু যারা এখানে থেকে আয় করে বিদেশে অন্যায়ভাবে পাচার করছে তার বিরুদ্ধে মূলত আমাদের কথা। সরকার চাইলে অনেক কিছু সম্ভব কারণ মানি লন্ডারিং চুক্তি থেকে শুরু করে আরো অনেকগুলো আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়েছে।
আবু আলম শহীদ খানঃ
একটি তথ্য দিয়ে সব সরকারি কর্মকর্তাদের ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে এরকম উক্তি করতে আমি রাজি নই, কারণ আমাদের ২০ লক্ষ সরকারি কর্মাচারীর মধ্যে ৯৯ শতাংশ কর্মকর্তা দিন আনে দিন খায় এবং এর মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক আছে যারা খারাপ। যারা দুর্নীতি করে তারা খারাপ এবং তা দিয়ে সব সরকারি কর্মকর্তার চরিত্র বিবেচণা করা ঠিক হবে না। (২০:১৪:২৪) ওনার উচিত ছিলো নাম প্রকাশ করে কথা বলা এবং তাদের সম্পদের পরিচয়টাও জানানো কিন্তু উনি সেটি করেননি। উনি আবার আবার অনেক কথা বলেছেন তার শেষ কথাটি ছিল তাদেরকে উনি অনুরোধ করেছেন তারা যেন তাদের টাকা-পয়সা দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিনিয়োগ করে। আমি খুবই বিরক্ত এবং আমি খুবই ক্ষুব্ধ তার এইসব কথা শুনে কারণ যে টাকা মানুষ দুর্নীতি করে বিদেশে নিয়ে যাবে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ যেটা রাষ্ট্র কর্তৃক জব্দ হবে এবং যার বিচার হবে তাদেরকে উনি কিভাবে এই টাকা ফেরত নিয়ে বিদেশে থেকে ঢাকায় নিয়ে যেয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে বলেন (২০:১৫:০০)। (২০:১৫:৪৭) হাইকোর্টকে এটা কেন বলতে হবে? কেননা হাইকোর্ট এটা বলার আগে দেশে আইন আছে, আইন অনুযায়ী দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করা নিষিদ্ধ। এজন্য দেশে দুদক আছে তাদের ব্যবস্থা নেয়ার কথা, এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান আছে তাদের ব্যবস্থা নেয়ার কথা (২০:১৬:০৩)। (২০:৪২:৩২) আমি ঠিক পররাষ্ট্র মন্ত্রী যিনি মহোদয় বলেছেন এই ২৪ জন আমি বলছি যে যার মধ্যে ৪ জন মাত্র রাজনীতিবিদ, ওদেরকে যদি বাদ দেই তাহলে বাকি ২৪ জন ব্যবসায়ী এবং সরকারি কর্মকর্তা আছেন। এটা কানাডার একটা খবর এটা টরেন্টো শহরের খবর হতে পারে এবং উনি যদি এটি বলে থাকেন যে উনি কারো কাছ থেকে এটা শুনেছেন তাহলে এই ধরনের তথ্যকে উনি জনসম্মুখে প্রকাশ করাই উচিত হয়নি, এটাতো খুবই অন্যায় কাজ।
যে আপনি কারো কাছে কান কথা শুনে একটা তথ্য প্রকাশ করে দিবেন এবং সেই তথ্যের কোন ভিত্তি থাকবে না, কোন সরকারি ভিত্তি থাকবে না। আপনার কাছে কোন প্রমাণ থাকবে না পরবর্তীতে আপনি বলবেন যে এটা আমি দিতে পারবো না, কারণ আমি তো অন্যর মুখে শুনেছি। মুখের কথা একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিভাবে একটা সংবাদ সম্মেলনে যেয়ে না একটা অনুষ্ঠানে যেয়ে এভাবে বলেন আমি অবাক হয়ে যাই। আমি খুবই অবাক এবং এটা কোনভাবেই ভালো কাজ হয়নি অনুচিত হয়েছে (২০:৪৩:১৯)।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকঃ
কানাডা সহ পৃথিবীর তার সকল দেশেই কিন্তু আজকাল মানিলন্ডারিং রেজিস্ট্রেশন রয়েছে এবং সেই রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী যখনই আপনার বিদেশে কোন টাকা যায় সেই তথ্যগুলো কিন্তু ওই দেশের সরকারের কাছে থাকে। বাংলাদেশের সাথে কানাডাসহ বেশ কয়েকটি দেশের সাথে একটি চুক্তি হয়েছে, সেই চুক্তিটি হচ্ছে যারা টাকা পাচার করছে তাদের টাকা পাচার এ ব্যাপারে খবরা-খবর প্রদান করা। ব্যাংগুলোর ক্ষেত্রে একটি ব্যাপার থাকে যে তারা তাদের কাস্টমারের ব্যাপারে কারো কাছে কোন খবর দিতে চায় না কিন্তু মানি লন্ডারিংয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফলে তারা এই তথ্য দিতে বাধ্য যেখানে টাকা পাচার হয়েছে। সিঙ্গাপুরের যখন কোকো ও তারেক জিয়া টাকা পাচার করছিল তখন সিঙ্গাপুর একটু গরিমশি করছিল, পরবর্তীতে সিঙ্গাপুর সরকার বাধ্য হয়েছে টাকা পাচারের তথ্য দিতে। কোকো এবং তারেক জিয়ার টাকা ফেরত আনা হয়েছে সে তো এখানে একটি বিধান রয়েছে, তাহলে সেই বিধান অনুযায়ী এদের টাকা ফেরত আনা হোক।