ধর্ষকের স্বীকারোক্তি
শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা
প্রকাশিত: ১৯:১৬ ২৭ জুন ২০২২ আপডেট: ২১:৫৫ ২৭ জুন ২০২২

ধর্ষক আনোয়ার হোসেন স্বপন ও পুলিশের সংবাদ ব্রিফিং। ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ
ধর্ষণের কথা মাকে বলে দিবে বলার পর ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুর গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। তারপরও হত্যার ঘটনাটি নিশ্চিত করতে ওই ঝোপ-জঙ্গল থেকে গাছের মোটা লতা দিয়ে শক্ত করে গলা পেঁচিয়ে এবং গলা থেকে একটি লতা টানা দিয়ে শিশুর হাঁটুর সঙ্গে বেঁধে পাশের কড়ই গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে রেখে আসামি পালিয়ে যায়।
বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে শিশুটি প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ থেকে বেরিয়ে বাইরে গেলে গ্রামের আনোয়ার হোসেন স্বপন নামে এক ব্যক্তি শিশু শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরে কোলে করে বিদ্যালয়ের অদূরে পুকুর পাড়ের কবরস্থানের ঝোপজঙ্গলের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে ওপর পাশবিক কায়দায় ধর্ষণ করা হয়। শিশুটি কাঁদতে শুরু করে এবং মাকে বলে দিবে বলে জানালে আনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ সময় ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাহিদা ফারজানা, সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) সার্কেল মাশকুর রহমান, দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমাম, জেলা ডিবির ওসি মো. মেজবাহ উদ্দিন আহম্মদ, ফেনী কোর্ট পারিদর্শক গোলাম জিলানী উপস্থিত ছিলেন।
তার আগে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন স্বপন ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এরপর তাকে পুলিশ পাহারায় ফেনী জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত শনিবার সকালে ফেনীর দাগনভূঞার জায়লস্কর ইউপির নেয়াজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরে বিদ্যালয়ের পেছনের পুকুর পাড়ের আধা জঙ্গল জাতীয় স্থানে এক গাছের গোড়ায় গলায় লতা পেচাঁনো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের পরই এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একই গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন স্বপন নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
রোববার দুপুরে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতারেল মর্গে ওই শিশু শিক্ষার্থীর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে গ্রামের বিদ্যালয় মাঠে শিশুটির জানাজা শেষে তার পৈত্রিক পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এ সময় দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবীর, স্থানীয় জায়লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ, বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ স্থানীয় লোকজন অংশ নেয়।
দাগনভূঞা থানার ওসি মো. হাসান ইমাম জানান, শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আসামি আনোয়ার হোসেন স্বপনের ফেনীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, পুলিশ নানা তথ্য উপাত্ত ব্যবহারের মাধ্যমে হত্যার ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যেই আসামিকে গ্রেফতার ও তার স্বীকারোক্তি আদায় সম্ভব হয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এমকে