পাঁচ বছর প্রেম করে বিয়ে, আট বছর পর স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা
প্রকাশিত: ১০:৫৬ ১৭ মে ২০২২

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত স্বামী সোহেল রানা-ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ
পাঁচ বছর প্রেম করে বিয়ের আট বছর পর স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন স্বামী সোহেল রানা। গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এর (পিবিআই) তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত সোহেল রানা দিনাজপুরের নবাবগঞ্চ থানার শিববপুর গ্রামের কোহিনুরের ছেলে। সোহেল গাজীপুর সদর জয়দেবপুর থানাধীন ভবানীপুর এলাকায় স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন ও ৪ বছরের ছেলে মো. ফাহিম প্রমাণিককে নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই এর এসআই মনিরুজ্জামান জানান, ৫ বছর প্রেম করে ২০১২ সালে বৃষ্টি খাতুনকে বিয়ে করে মো. সোহেল রানা। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে কোনো ঝগড়া-বিবাদ বা কলহ ছিল না। সম্প্রতি সোহেল রানার বাবা ও মায়ের ইন্ধনে পুত্রবধূ বৃষ্টি খাতুনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল এবং কারণে অকারণে আত্মহত্যা করার জন্য প্ররোচিত করতো।
একপর্যায়ে ২০২০ সালের ৭ আগস্ট জয়দেবপুরের দক্ষিণ নয়াপাড়া এলাকার মো. মিজানুর রহমান মজনু মিয়ার বাড়িতে তার ভাড়া ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা হলে থানার পুলিশ এ মামলায় কাউকে গ্রেফতার না করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পরে আদালতের নির্দেশে পিবিআই মামলাটির তদন্ত শুরু করে। পরে গত ১৪ মে পিবিআই মৃতের স্বামী সোহেল রানাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বিবাদ হতো। ঘটনার ৬ দিন আগে ঈদের ছুটিতে সোহেল ও তার স্ত্রী সন্তানসহ শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে যায়। ঈদ শেষে সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে স্বামী-স্ত্রী দুইজন কর্মস্থলে চলে আসে। সকাল ১০টার দিকে স্ত্রীর কাপড় ধোয়া নিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটি। একপর্যায়ে সোহেল রানা বৃষ্টিকে গলা চেপে ধরে রাখে। কিছু সময় পরে বৃষ্টির শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্বামী সোহেল রানা বিষয়টিকে আত্মহত্যায় রূপান্তরিত করার জন্য স্ত্রীর গলায় ওড়না বেঁধে বারান্দার আড়ার সঙ্গে টানিয়ে দেয়। এরপর কৌশলে বারান্দা ও বেড রুমের দরজা বন্ধ করে ঘরের চালের সিলিং এর ফাঁকা করে বেড রুমে গিয়ে চিৎকার শুরু করে। পরে সোহেলের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আসে এবং বারান্দার রুম থেকে বৃষ্টিকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত সোহেলকে রোববার গাজীপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেএইচ