‘কথা দিয়া মনার বাবায় তো আর আইলো না’
প্রকাশিত: ১২:১৪ ১১ এপ্রিল ২০২২ আপডেট: ১২:৫২ ১১ এপ্রিল ২০২২

একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে জেলে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছবি: সংগৃহীত
‘গাঙ্গে যাওয়ার সময় বইলা গেছে মনার দিকে খেলায় রাখিস। বাড়িত আইয়া তারাবি নামাজ পরমু, আমার লাইগা দোয়া করিস। কথা দিয়া মনার বাবায় তো আইলো না।।’
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মেঘনায় মাছ ধরতে গিয়ে গুলিতে নিহত ভোলার রাজাপুর ইউপির মোহাম্মদ আলীর গ্রামের জেলে আমির হোসেনের স্ত্রী সুরভী বেগম।
তিনি আরো বলেন, ‘ঘরে অভাব, তাই বাধ্য হয়ে সে নদীতে গেছে। এখন পোলা এবং বৃদ্ধা শ্বশুর-শাশুড়িকে কে দেখবে? আমরা তো শ্যাষ হইয়া গেলাম’।
একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মৃত্যুর খবর আসার পর থেকে বিলাপ করছেন স্ত্রী ও মা। শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তারা। কী করে চলবে আগামী দিনগুলো। কোনো কুল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না পরিবারটি।
নিহতের স্বজনরা জানান, পরিবারের অভাবের কারণে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে যায় আমিরসহ ১১ জেলে।
জেলে আমিরের মা ছকিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলের দোষ নেই। হেরা আমার পোলারে গুলি কইরা মারছে। আমি পোলা হত্যার বিচার চাই।’
জানা গেছে, ভোলা সদরের চর মোহাম্মদ আলীর গ্রামের আমিরসহ ১১ জেলে মনির চৌকিদারের ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারে গিয়েছিলেন। শনিবার রাত ৯-১০টার দিকে টহলরত নৌ পুলিশের সঙ্গে জেলেদের সংঘর্ষ হয়। এতে এক জেলে নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।
ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুচিত কুমার হালদার বলেন, আগে ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। তারপর যদি জেলেরা নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত জেলে পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এমকে