দুধ-কলাতেও থাকল না ‘কাউয়ার মা’
প্রকাশিত: ১৮:২৫ ২০ জানুয়ারি ২০২২ আপডেট: ১৯:০৭ ২০ জানুয়ারি ২০২২
খাল-বিল ছেড়ে উষ্ণতার খোঁজে ডাঙায় অবস্থান নেয় একটি ঢোঁড়া সাপ। এরপরই সাপটিকে ঘিরে শুরু হয় তুলকালাম কাণ্ড। দুধ-কলা খাওয়ানো থেকে শুরু করে কমতি ছিল না কোনো আতিথিয়তার। এমনকি সাপটিকে এক নজর দেখতে সেখানে ভিড় করে শতশত মানুষ।
১১ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানার বিশ্বকলোনি এলাকার বি-ব্লক ভাণ্ডারি কলোনিতে এমন এক ঘটনার জন্ম হয়। এরপরই পুরো বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ চারিদিকে। সেখানে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের ভিড়।
ঐ এলাকার কারো কারো মতে, আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া এক বৃদ্ধার আত্মা ফিরে আসে সাপ হয়ে। যাকে সবাই ‘কাউয়ার মা’ বলে চিনতেন। ধার্মিক ও দরবার শরীফের ভক্ত হওয়ায় আল্লাহর উছিলায় এভাবে ফিরে আসেন তিনি।
আরো পড়ুন >>>দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাওয়ায় বাবাকে গলা কেটে হত্যা
আবার এমন লঙ্কাকাণ্ডে বিরক্তও হয়েছেন স্থানীয়দের অনেকে। তাদের মতে, এটি স্রেফ গুজব ছাড়া কিছুই নয়। আর অবশেষে কথাটিই যেন স্থায়ী হলো। দিনের শেষে সন্ধ্যায় তাকে ফুল, আগরবাতি ও মোমবাতি দিয়ে ছোট্ট একটি ঘরে পরম যত্নে রাখা হলেও পরদিন ভোর হতেই উধাও হয়ে যায় কথিত সেই ‘কাউয়ার মা’। এরপরই যেন ধীরে ধীরে সবার কাছে ধোঁয়াশা হতে থাকে সাপ রূপে মৃত মানুষের ফিরে আসার সেই আষাঢ়ে গল্পটি।
এ প্রসঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান রাকিব বলেন, কলোনির কিছু অশিক্ষিত মানুষের ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে এমনটি হয়েছে। তারা ফুল, আগরবাতি ও মোমবাতি দিয়ে সাপটিকে থাকার জায়গা করে দেয়। আর কিছুদূর গড়ালে হয়তো সেখানে একটি মাজার তৈরি হতো। আমাদের ইসলাম এসব ভণ্ডামি সমর্থন করে না।
আরো পড়ুন >>> সেতুর নিচে মায়ের লাশ, এক কিলোমিটার দূরে কাঁদছিল শিশুটি
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা সোহেল রুমি বলেন, আমি ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলাম। বাড়ি ফিরতেই শুনি এ ঘটনা। এরপর সাপটির কাছে গিয়ে দেখি লোকজনের ভিড়। সবার মুখে মুখে বলতে শোনা যাচ্ছিল- আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া কাউয়ার মা সাপ হয়ে ফিরে এসেছে। আসলে বর্তমানে যুগে এসে এসব ভিত্তিহীন কথাবার্তা মোটেও কারো কাম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, এর পেছনে সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এ কলোনি রেলওয়ের জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে। যে নারীর কথা বলা হচ্ছে তিনিও এখানে ভাড়ায় থাকতেন। ফলে এটি কলোনিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার ফন্দিও হতে পারে।
জানা যায়, গত ১৯ ডিসেম্বর ভোরে নিজ বাসায় আগুনে পুড়ে মারা যান বৃদ্ধা রেজিয়া খাতুন। প্রতিবেশীর কাছে তিনি ‘কাউয়ার মা’ নামে পরিচিত ছিলেন। প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে ওই কলোনিতে ভাড়া থাকতেন তিনি।
ঘটনার দিন প্রতিবেশীরা মেয়েটি উদ্ধার করলেও রেজিয়াকে বের করতে পারেননি। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ডেইলি বাংলাদেশ/এমকে