বিএনপি নেতার বাসায় শিশু গৃহকর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতন
প্রকাশিত: ০০:৩২ ১৭ জানুয়ারি ২০২২ আপডেট: ০০:৩৩ ১৭ জানুয়ারি ২০২২

বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলামের বাসায় নির্যাতনের শিকার শিশু তাসনিয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের ঢাকার বাসায় এক শিশু গৃহকর্মীকে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার শিশু তাসনিয়ার মা ফাতেমা বেগম।
বাড়ি যাওয়ার কথা বললেই ঐ বিএনপি নেতার মেয়ে ‘জুতাপেটা’ করতেন বলে পুলিশকে জানিয়েছে তাসনিয়া নামের ওই শিশু। তাসনিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের হাবলাউচ্চ গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেনের মেয়ে। সে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
তাসনিয়ার মা ফাতেমা বেগম জানান, ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে তাসনিয়া সবার ছোট। স্বামী ও দুই ছেলে অটোরিকশা চালায়। ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা বলে প্রতিবেশী রফি বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বাসায় তাসনিয়ার বড় বোন তিশাকে (১১) নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
রফি বেগম জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের বাসায় তিশাকে নেওয়া হবে। এ জন্য তাদের এককালীন ১০ হাজার টাকা দেন রফি বেগম।
ফাতেমা জানান, তিশাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসায় না রেখে জোর করে ঢাকার গোড়ান এলাকায় সিরাজুল ইসলামের ভায়রার বাসায় নেওয়া হয়। দেড় মাস পর ওই বাসা থেকে পালিয়ে টহল পুলিশের সহায়তায় খিলগাঁও থানায় আশ্রয় নেয় তিশা। খবর পেয়ে খিলগাঁও থানায় যান তিশার মা ও রফি বেগম। রাত হয়ে যাওয়ায় রফি বেগম তিশা ও তার মাকে নিয়ে সিরাজুল ইসলামের ওই বাসায় ওঠেন। এরপর এককালীন নেয়া ১০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য শিশু তাসনিয়াকে জিম্মা রেখে তারা টাকা সংগ্রহের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিরে আসেন।
এদিকে তিশার ছোট বোন তাসনিয়াকে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে ঢাকায় রাখতে রাজি করান রফি বেগম। কিন্তু এরপর থেকে তাসনিয়াকে তার মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। থানায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশু তাসনিয়া বলে, ঢাকার বাসায় আপুরে (গৃহকর্ত্রীর মেয়ে) আমি আম্মার কাছে যাওয়ার কথা বলছি। পরে আমার গালে জুতা দিয়া বারি মারছে। বাড়ি যাওয়ার কথা কইলেই আমারে জুতা দিয়া মারত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, শিশুটির মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এআর