১০ বছর ধরে সেপটিক ট্যাংকের ওপর বসবাস
প্রকাশিত: ০১:৫০ ২৮ জানুয়ারি ২০২১

পাবলিক টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ওপর বসবাস
সৎমায়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে খুব ছোট বয়সে বাবার বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি ছাড়েন ৩৫ বছরের সাথী বেগম। সেখান থেকে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাতে গিয়ে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা সদরে আসেন।
এরপর থেকে নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে জীবনযুদ্ধ চালান। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্থায়ী কোনো ভিটে-মাটির সন্ধান পাননি সাথী। তবে কিশোরী থেকে এখন তিনি পাঁচ সন্তানের মা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সন্তানদের লালন-পালনসহ সহযোদ্ধা মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামী সোহাগ খানকে দেখভাল করে জীবন কাটাতে হচ্ছে।
জীবনযুদ্ধে সন্তান-স্বামীকে নিয়ে বেঁচে থাকতে বর্তমানে সাথী বেগমকে কোনোভাবে টিনের বেড়া দিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে বাবুগঞ্জ বন্দর বাজারের পাবলিক টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ওপর। যেখানে মনুষ্য বর্জ্যের চরম দুর্গন্ধ সয়ে সন্তানের নিয়ে দিনের পর দিন পার করছেন সাথী দম্পতি।
সাথী বেগম জানান, খুব ছোটবেলায় সৎমায়ের অত্যাচারে ঘর ত্যাগ করেন। এরপর মাদারীপুরের কালিকিনি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে চলে আসেন বরিশালের বাবুগঞ্জ বন্দর বাজারে। যেখানে এসে প্রথমে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। এর কিছুদিন পর বাগেরহাটের ছেলে সুইপার (মেথর) সুমন খানের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরিচয় সূত্র ধরে সোহাগের সঙ্গে সুইপারের কাজও করেছেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি স্থানীয়রা ভালোভাবে নিতে না পেরে অপবাদ দিতে শুরু করেন।
সেই অপবাদ ঘোচাতে সুমনকে বিয়ে করে সংসার গড়েন। শুরুতে বাবুগঞ্জ বন্দর এলাকার সিনেমা হলের আশপাশে থাকলেও সেটি ভেঙে ফেলায়, নতুন আশ্রয় গড়েন বন্দর বাজারের মসজিদ সংলগ্ন একটি খালি জায়গায়। সেখানেই দুইবার ছাপড়া ঘর পাল্টে এখন রয়েছেন পাশের পাবলিক টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ওপর। অন্যের জায়গায় আশ্রয় না মেলায় এখন এটিই তার আশ্রয়স্থল।
ডেইলি বাংলাদেশ/এমআর