একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই এখন সংসারের বোঝা
প্রকাশিত: ১৮:১২ ২৫ নভেম্বর ২০২০ আপডেট: ২০:১৪ ১২ ডিসেম্বর ২০২০

সরোয়ার হোসেন মৃধা
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব সরোয়ার হোসেন মৃধা। যখন যে কাজ পেতেন তাই করতেন। হঠাৎ ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তার। এরপর ভারী কাজ বাদ দিয়ে শুরু করলেন অটোরিকশা চালানো। যা উপার্জন হতো তা দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সংসার চলত।
মাস তিনেক আগে বাম পায়ে আঘাত পান সরোয়ার মৃধা। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে কোনো উন্নতি না হওয়ায় ভর্তি হন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবু দিনদিন অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপর রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসা শুরু হয়। এরই মধ্যে শেষ হয়ে যায় তার কষ্টের উপার্জন থেকে জমানো সব টাকা। চিকিৎসা চলে স্বজন-প্রতিবেশী-বিত্তবান-স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আর্থিক সহায়তায়।
দীর্ঘদিনের চিকিৎসায় কোনো উন্নতি না হওয়ায় সরোয়ার হোসেন মৃধার পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসক। পঙ্গু হয়ে যান মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি। এখন অভাব-অনটনে দিনযাপন করছেন তিনি।
নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে সরোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, স্ত্রী ও সাত ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভালোই ছিলাম। এরই মধ্যে পাঁচ মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। ছোট মেয়ে কলেযে ও ছেলে হাইস্কুলে পড়ে। এখন আমার চিকিৎসা-ওষুধের পেছনেই অনেক টাকা খরচ হয়। সংসার চালাবো কীভাবে? শেষ বয়সে এসে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
সরোয়ার হোসেন মৃধাকে সৎ ও পরিশ্রমী হিসেবেই চেনেন স্বজনরা। তারা জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। এখন তার কষ্ট সহ্য করা যায় না। চিকিৎসার জন্য নিজের জমানো সব টাকা খরচ করে ফেলেছেন। এই অবস্থায় ছোটখাটো উপার্জনের ব্যবস্থা হলে পরিবার নিয়ে কিছুটা হলেও ভালো থাকতে পারবেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. কুদ্দুস হোসেন জানান, সরোয়ার হোসেন মৃধার চিকিৎসায় স্থানীয় যুবসমাজ, বিত্তবান ও স্বেচ্ছাসেবীরা এগিয়ে এসেছিল। আরেকবার সবাই মিলে যদি তার একটা উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় তাহলে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাকি জীবন ভালোভাবেই কাটাতে পারবেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে আলোচনা হয়েছে। বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এআর/জেডএম