কচুরিপানার ভেতর নড়ে উঠল শিশু, মৃত ভেবে ফেলে গিয়েছিলেন তিন প্রতিবেশী
প্রকাশিত: ১৮:২৬ ২১ নভেম্বর ২০২০ আপডেট: ১৮:২৮ ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

সৌদিপ্রবাসী নবীরুল ইসলামের ছেলে সোহাগ।
কচুরিপানার ভেতর থেকে ভেসে আসছে শিশুর কণ্ঠস্বর। কাছে যেতেই নড়ে উঠল কচুরিপানা। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে মুমূর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
নরসিংদীর রায়পুরায় সোহাগ নামের ওই শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতনের পর মৃত ভেবে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে ফেলে যায় তিন প্রতিবেশী। ঘটনার আড়াই ঘণ্টা পর ওই শিশুকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। বর্তমানে শিশুটি নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
শুক্রবার উপজেলার শ্রীনগন ইউনিয়নের ভেলুয়ারচর পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিশু সোহাগ ওই এলাকার সৌদিপ্রবাসী নবীরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন একই ইউনিয়নের ভেলুয়ারচর পূর্বপাড়ার আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন, শহিদুল্লাহর ছেলে রায়হান মিয়া ও শহীদ উল্লার সোহান মিয়া।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় শিশু সোহাগকে মাছ ধরার প্রলোভনে বাড়ি থেকে ডেকে সাবেক শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের বাড়ির পেছনের নির্জন চরে আনে আল আমিন। এরপর একই কথা বলে ওই শিশুকে এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। পরে আল আমিন ও তার দুই সহযোগী রায়হান ও সোহান মিলে ওই শিশুর দুই পা, হাত ও গলায় রশি দিয়ে চেপে ধরে। একপর্যায়ে শিশু সোহাগ অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর তারা শিশুটি মৃত ভেবে কচুরিপানায় চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ওই শিশুর গলার আওয়াজ শুনে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
শিশু সোহাগ জানায়, রায়হান আমার দুই পা, সোহান দুই হাত ও আল আমিন গলায় রশি দিয়ে চেপে ধরে। তখন বাঁচার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করি। একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে দেখি সারা শরীর কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা। পরে স্থানীয় লোকজন আমার শব্দ শুনে এগিয়ে এসে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীর মামা আব্দুর রহমান জানান, তারা মৃত ভেবেই সোহাগকে কচুরিপানায় চাপা দেয় এবং সেখান থেকে পালিয়ে যায়। চিকিৎসা পেয়ে অনেকটাই সুস্থ সোহাগ। তবে ভয়-ভীতি এখনো কাটিয়ে উঠনে পারেনি।
রায়পুরা থানার এসআই দেব দুলাল দে বলেন, এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। দোষীদের খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেএইচ