বাড়ছে ‘বেডে’ চাষ করা সবজির চাহিদা
প্রকাশিত: ১২:২০ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ আপডেট: ১২:২৪ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
দেশে সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বেশি জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে বিভিন্ন সবজি চাষ ও চারা উৎপাদন হয় পিরোজপুরের নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায়। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এ পদ্ধতির চাষাবাদ। তবে দিনদিন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা আগের মতো লাভ করতে পারছে না। এমনকি সম্ভাবনাময় এই কৃষিক্ষেত্রে মিলছে না কোনো সহযোগিতা। ফলে অনেকটাই হতাশ এ এলাকার চাষিরা।
নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায় ভাসমান পদ্ধতিতে উৎপাদিত সবজি দেশের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করছে। আর এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে বিলাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের। ভৌগোলিকভাবেই নাজিরপুরের দেউলবাড়ী-দোবড়া, কলারদোয়ানিয়া, মালিখালী ও নেছারাবাদের বলদিয়া ইউপির অধিকাংশ এলাকা সারা বছর ৫-৮ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে সেখানে কোনো প্রকার চাষাবাদ সম্ভব হয় না।
স্থানীয়রা জানায়, এসব অঞ্চলে প্রচুর কচুরিপনা ও জলজ উদ্ভিদ জন্মে। আর এই কচুরিপনা দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে চাষিরা তৈরি করে ভাসমান বেড যা স্থানীয়ভাবে ধাপ নামে পরিচিত। এগুলো স্বাভাবিকভাবেই পানির উপর ভেসে থাকে। তাই পানির স্তর বৃদ্ধি পেলেও, কৃষকদের কোনো ক্ষতি হয় না। এই ধাপের উপর অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ দিয়ে তারা উৎপাদন করেন সবজি ও চারা। তবে প্রতিনিয়ত এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে বেশি দামে কৃষি উপকরণগুলো কিনতে হচ্ছে। পাশাপাশি জমি লিজ নেয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে হচ্ছে। এতে দিনদিন বাড়ছে উৎপাদন খরচ, কমছে লাভ।
নাজিরপুরের কলারদোয়ানিয়া কৃষি উন্নয়ন ক্লাবের সংগঠক মো. আক্তারুজ্জামান ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, ভাসমান সবজি চাষ বর্তমানে অনেক ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। এ খাতে সরকারি সহযোগিতা না থাকায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিওর কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কৃষকরা চাষাবাদ টিকিয়ে রাখছে। সরকারি সহযোগিতা কিংবা স্বল্প সুদে ঋণ পেলে এ খাতে আরো উন্নতি করা সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ। চাষিদের আয় বৃদ্ধি ও ভাসমান চাষ পদ্ধতির উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ আরো লাভজনক হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এআর