উলঙ্গ থাকতেই পছন্দ করত মিশরীয়রা, চুল ছিল অপছন্দের
প্রকাশিত: ১১:৫৯ ৪ ডিসেম্বর ২০২০ আপডেট: ১৬:৫২ ৪ ডিসেম্বর ২০২০

ছবি: প্রতীকী
মিশরীয় সভ্যতা নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। প্রাচীন মিশরের সভ্যতা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে অন্যতম। এই সভ্যতা নিয়ে এমনকিছু চোখ ধাঁধানো তথ্য আছে যা অনেকেরই অজানা।
আরো পড়ুন; দুই হাজার বছর ধরে সমৃদ্ধির স্বর্ণযুগে যেভাবে পৌঁছায় মিশর
প্রাচীন মিশরের জনগণের মধ্যে মৃত্যুকেন্দ্রিক বেশ কিছু রীতিনীতি, সংস্কৃতি প্রগাঢ় রূপ ধারণ করেছিল। যে কারণে ক্ষমতাধর ফারাওরা পিরামিড এবং মন্দির নির্মাণের জন্য জনগণকে শ্রম দিতে বাধ্য করত। সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হলো সেবকদেরকে রাজার সঙ্গে সহমরণে যেতে হত।
সেবকদের জীবন্ত কবর দেয়া হত
মিশরের কোনো রাজা মারা গেলে তার সঙ্গে তার সেবকদের কবর দেয়া হত। যেন তারা মৃত্যুর পরেও রাজার সেবা করতে পারে। প্রথমে তাদের মাথায় আঘাত করে তাদেরকে অজ্ঞান করা হত। তারপর তাদের জীবন্ত কবর দেয়া হত। বিষয়টি আপনার আমার কাছে ভয়ংকর নৃশংসতার মনে হলেও এরকমটাই ছিল প্রাচীন মিশরীয় রীতিনীতি।
যৌনতা নিয়ে সচেতন
প্রাচীন মিশরীয়রা তাদের যৌনতা নিয়ে খুবই সচেতন ছিল। তাই কোনো পুরুষ মারা গেলে তাদের মমি ফাই করার পর তাদের যৌনাঙ্গ কেটে সে স্থানে কৃত্রিম যৌনাঙ্গ সংযুক্ত করা হত। এমনকি কোনো নারীর মৃত্যু হলে তাদের স্তন কেটে মরদেহের সঙ্গে কৃত্রিম স্তন যুক্ত করা হত। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, মৃত্যুর পরও তারা এই একই দেহে জন্মগ্রহণ করবে। তাই পরবর্তী জীবনে যেন যৌন মিলনে সমস্যা না হয়, সেজন্যই তাদের এই প্রক্রিয়া।
জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ আবিষ্কার
আপনি কি ভাবতে পারেন, যদি আজকের দিন পর্যন্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকতো, তাহলে পৃথিবীর জনসংখ্যা আজ কোথায় দাঁড়াত? হয়তো বা আমরা একজন আরেকজনের উপরে দাঁড়ালেও সব জনসংখ্যাকে এই পৃথিবীতে স্থান দিতে পারতাম না। এই জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিল প্রাচীন মিশরীয়রা। তারা মাটি, মধু ও কুমিরের মল দিয়ে এমন এক ওষুধ তৈরি করেছিল, যার দ্বারা সেই সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছিল।
টুথপেস্ট ও তৈরি হয় মিশরে
মিশরীয়রা খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকত। নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার ও গোসল ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ। আপনি জানেন কি? মিশরীয়রাই প্রথম টুথপেস্ট আবিষ্কার করেছিল। কারণ তারা নিজেদের দাঁত পরিষ্কার রাখায় খুবই সচেতন ছিল। এতটাই যে, মৃত্যুর পর তারা মমির সঙ্গে টুথপেস্ট দিয়ে দিতো।
বর্ণমালা আবিষ্কার হয় মিশরে
প্রাচীন মিশরীয়রা ছিল গাণিতিক হিসাবে অত্যন্ত পটু। শুধু তাই নয়, তারাই সর্বপ্রথম বর্ণমালা আবিষ্কার করেছিল। এমনকি পৃথিবীর প্রথম ক্যালেন্ডারও মিশরেই আবিষ্কৃত হয়।
বিড়ালের মমি
সেসময় মিশরে বিড়াল ছিল মানুষের সবথেকে প্রিয় প্রাণী। তখনকার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই বিড়াল পুষতো। এমনকি কোনো বিড়াল মারা গেলে বিড়ালের সঙ্গে কিছু ইঁদুরকেও মমি করে বিড়ালের সঙ্গে দিয়ে দেয়া হত। যাতে পরের জীবনে তাদের খাবার নিয়ে সংকটে না পড়তে হয়।
৭০ দিনে তৈরি হত মমি
প্রাচীন মিশরে মৃতদেহকে সংরক্ষণ করার জন্য মমি করে রাখা হত। কারণ তারা বিশ্বাস করতো পরের জন্মে তারা একই দেহে জন্মগ্রহণ করবে। প্রথমে তারা মৃতদেহ থেকে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বের করে নিত। তারপর মস্তিষ্কটি বের করে আনা হত নাক দিয়ে। শুধু হৃদপিণ্ডটিকে শরীরের ভেতরে রেখে দেয়া হত। কারণ তারা মনে করত, হৃৎপিণ্ডই আত্মার বাসস্থান। ৭০ দিনে তৈরি করা হত একটি মমি।
বিয়ের আগে যৌনমিলন করলেই মৃত্যুদণ্ড
প্রাচীন মিশরে যদি একজন মানুষ বিয়ের আগে যৌনমিলন করতো, তবে বিষয়টিকে খারাপ চোখে দেখা হত। অথচ যদি কোনো নারী বিয়ের আগে যৌনমিলন করতো, তবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হত।
চুল ছিল অপছন্দের
প্রাচীন মিশরে চুলকে অস্বাস্থ্যকর ভাবা হত। তাই তারা দেহের কোথাও চুল রাখত না। চুল না রাখার আরও একটি কারণ ছিল, মিশরের অত্যন্ত গরম আবহাওয়া। তাই মিশরীয়রাই প্রথম নকল চুল আবিষ্কার করেছিল। যেন বেশি গরম পড়লে তারা সেই নকল চুল খুলে ঠান্ডা অনুভব করতে পারে।
ছেলেরা সবচেয়ে বেশি মেকআপ করত
এখনতো মেয়েদেরকে মেকআপ ছাড়া চিন্তাও করা যায় না। আর একসময় ছেলেদেরকেও মেকআপ ছাড়া ভাবাই যেত না। শুনে অবাক হলেও বিষয়টি সম্পূর্ণ সত্য। প্রাচীন মিশরে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও নিজেদের সৌন্দর্য বর্ধনে মেকআপ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করতো।
উলঙ্গ থাকার ইচ্ছা
তখনকার সময়ে মানুষদের পোশাক থাকা সত্বেও উলঙ্গ থাকাটাকে তারা ফ্যাশন হিসেবে নিত। নিজেদের যৌনাঙ্গ নিয়ে জনসম্মুখে বিভিন্নভাবে প্রদর্শন করতো।
রানি ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য
ক্লিওপেট্রার সবাই কমবেশি জানে। তার রূপচর্চার রহস্য এখনো সম্পূর্ণরূপে উন্মোচিত হয়নি। তবে কিছু কিছু প্রণালী আজও সারা বিশ্বে বিখ্যাত। এমনটাও বলা হত যে, রানি ক্লিওপেট্রা এতটাই সুন্দরী ছিলেন যে তাকে পাওয়ার জন্য যেকোনো পুরুষ নিজের জীবন পর্যন্ত বলি দিতে পারতো।
ডেইলি বাংলাদেশ/জেএমএস