চসিক নির্বাচনে মিত্রদের সহযোগিতা পায়নি বিএনপি
প্রকাশিত: ১৩:১১ ২৮ জানুয়ারি ২০২১ আপডেট: ১৪:৪৪ ২৮ জানুয়ারি ২০২১

বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাত হোসেন- ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটের মাঠে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে জামায়াতসহ অন্যান্যদের সহযোগিতা পায়নি বিএনপি। তাই অসহযোগিতার কারণে এই নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. মো. শাহাদাত হোসেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগেই বিএনপি প্রার্থী শাহাদাতের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন অনেক হেভিওয়েট নেতা। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের সমর্থন তার সঙ্গে ছিল না। আর সেটি প্রমাণ হলো চসিক নির্বাচনের ফলাফলে। বিপুল ব্যবধানে বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত পরাজিত হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
দলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, চসিক নির্বাচনে শুরু থেকেই বন্ধুহীন অবস্থায় ছিলো বিএনপি। কেন্দ্র থেকে বারবার জামায়াত ও হেফাজতের নেতাদের কাছে দেন-দরবার করেও কোনো সাড়া মেলেনি।
জামায়াত ও হেফাজতের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, শুধু চসিক নয়, কোনো নির্বাচনেই আর বিএনপিকে সমর্থন দেয়া হবে না। নির্বাচন এলেই বিএনপিতে অবহেলিত দল ও সংগঠনের কদর বাড়ে।
বিএনপির প্রার্থিতা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপির সঙ্গে জোট বাধা দলগুলোর অনেক নেতা। তাদেরই একজন জানান, বিএনপির সঙ্গে জামায়াত, হেফাজতসহ অন্যান্য দলের নেতাদের সম্পর্ক তেমন ভালো না। তবে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী গোপনে চট্টগ্রামের জামায়াত ও হেফাজত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নানাবিধ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে সফল হননি তিনি।
জানা গেছে, শুধু জোটের দলগুলোই নয় বরং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আমির খসরুর মতো নেতারাও বিএনপির প্রার্থিতা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন। তারা দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকাশ্যে শাহাদাতের পক্ষে কথা বলেছেন কিন্তু মন থেকে কখনো খুশি ছিলেন না।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী দিতে জোর লবিং করেছিলেন আব্দুল্লাহ আল নোমান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তবে তারেক জিয়াকে ম্যানেজ করার কারণে মনোনয়ন পেয়ে যান শাহাদাত। যার ফলে শুরু থেকেই হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন দুই হেভিওয়েট নেতা। পাশাপাশি সিটি নির্বাচনে জামায়াতের মতামত না নেয়ায় পরিস্থিতি আরো বিগড়ে যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দলের মধ্যে কোন্দল, মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে অনেক আগে থেকেই বিএনপি ভুল পথে চলতে শুরু করেছে। এর মধ্যে হেফাজতের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সখ্য গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত, যে কারণে চসিক নির্বাচনে পুরোপুরি একা হয়ে গিয়েছিলেন শাহাদাত। বন্ধুহীন হয়েই নির্বাচনের পথ পাড়ি দেন বিএনপির এই প্রার্থী। বিক্ষিপ্ত পরিস্থিতির ফলে চসিক নির্বাচনে তার চরম ভরাডুবি হয়েছে।
ডেইলি বাংলাদেশ/এএএম/এমকেএ/এইচএন