ডায়বেটিস নিয়ে কিছু কথা
প্রকাশিত: ১৯:২৩ ১ ডিসেম্বর ২০১৮ আপডেট: ১৯:২৩ ১ ডিসেম্বর ২০১৮

ফাইল ছবি
আজকাল প্রায় ঘরে ঘরেই ডায়বেটিসের রোগী রয়েছে। বাড়ির বড় বা ছোট যে কারো ডায়বেটিস হতে পারে। এ ডায়বেটিস কেন হচ্ছে? ডায়বেটিস হয়েছে কিনা কি করে বুঝবেন? সে সম্পর্কে জেনে নিন-
ডায়বেটিস কয় ধরণের হয়ে থাকে?:
ডায়বেটিস মানে বহু মুত্র রোগ। তা আমরা সকলেই জানি। ডায়বেটিস সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে। যেমন: টাইপ-১ ও টাইপ-২।
টাইপ-১ ডায়বেটিস হলো, এ ধরণের ডায়বেটিসে অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষ ধ্বংস হয়ে যায়। এ ধরণের ডায়বেটিসে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন হয় অনেক কম। তাই ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয়। এ ধরনের ডায়বেটিস যে শুধু বড়দের হয় তা কিন্তু নয় শিশু, কিশোর সকলেরই এ ধরণের ডায়বেটিস হতে পারে।
টাইপ-২ ডায়বেটিস হলো এ ক্ষেত্রে দেহের অগ্নাশয়ের কোষগুলো ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে কিন্তু ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এ কারণেই মূলত টাইপ-২ ডায়বেটিস হয়ে থাকে। এ ধরণের ডায়বেটিস ৯০ শতাংশ মানুষের হয়ে থাকে। যারা গর্ভবতী মহিলা তাদের এক ধরণের ডায়বেটিস হয়ে থাকে। এটা খুবই কম সংখ্যাক মানুষের হয়ে থাকে। এ ধরণের ডায়বেটিস হলে শিশুরা অনেক ঝুঁকির মধ্যে থাকে। তাদের দেহে নানা রকম জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ:
ডায়বেটিস ধরা পড়ে অনেক দিন পরে। কারণ ব্লাড টেস্ট না করলে ডায়বেটিস খুব সহজে ধরা পরে না। ডায়বেটিসের কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো দেখে বুঝতে পারবেন ডায়বেটিস হয়েছে কি না। এ লক্ষণগুলোর মধ্যে- ঘন ঘন ক্ষুদা পাবে, আপনি খাচ্ছেন তা মনে হবে না। আপনার শক্তিক্ষমতা অনেক কমে যাবে। অল্প একটু কাজ করলেই অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। ঘন ঘন পিপাসা লাগবে। পানি খেলে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে ইচ্ছা করবে। যার কারণ ঘন ঘন টায়লেটে যেতে হবে। হটাৎ করে আপনার ওজন খুব বেড়ে যেতে পারে। আবার হটাৎ করে ওজন খুবই কমে যেতে পারে। চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন। অনেক সময় জিহ্বা শুকিয়ে আসবে। যার জন্যই বার বার পানি খেতে হবে। অথবা শরীরে চুলকানির মতো হতে পারে। কেটে গেলে ক্ষত স্থান সহজে শুকাতে চায় না। এ লক্ষণগুলো পরিচিত কারো মধ্যে দেখা গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কাদের মধ্যে বেশি ডায়বেটিসের প্রবণতা দেখা যায়:
ডায়বেটিস অনেক সময় বংশগত হয়ে থাকে। যেমন: বাবা মায়ের থাকলে সন্তানেরও হতে পারে। যদি আপনার ওজন বেশি তুলনামূলক ভাবে বেশি হয়ে থাকে তবে ডায়বেটিসের সম্ভাবনা থাকে। কায়িক পরিশ্রম না করলে বা শরীর থেকে ঘাম ঝারানোর মতো কাজ না করলে ডায়বেটিস হতে পারে। ব্লাড প্রেসার বা কোলেস্ট্ররেলের কোনো সমস্যা থাকলেও এ ডায়বেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডায়বেটিস খুবই মারাত্মক একটি রোগ। এটি শরীরের সব অঙ্গগুলো আস্তে আস্তে নষ্ট করে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে চোখে সমস্যা বা খিচুনি উঠতে পারে। তাই ডায়বেটিস হলে বা এর লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর অল্প অল্প করে বার বার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন বা হাঁটা ও ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ডায়বেটিস রোগীদের জন্য।
ডায়বেটিস হলে করণীয় :
ডায়বেটিস হলে হাঁটতে হবে। কায়িক পরিশ্রম করতে হবে এবং ব্যায়াম করতে হবে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে ও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে রাখতে হবে। শাক সবজি, ফলমূ্ল ও শস্য জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে গ্লুকোজের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আর শর্করা বা চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে দিতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিভিন্ন রকম রোগ থেকে নিজেকে বাঁচাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। পরিবারের কারো ডায়বেটিস থাকলে তবে ৪৫ বছর বয়স পার হয়ে যাওয়ার পর ডাক্তারের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে।
ডেইলি বাংলাদেশ/আরএজে